চলতড়িৎ কিংবা স্থির তড়িৎ হোক, যে কোন তড়িৎ নিয়ে কথা বলতে গেলে আমাদের তড়িৎ আধান কথাটি চলে আসে।আজকের আলোচনায় আমরা তড়িৎ আধান সম্পর্কে বিস্তারিত জানব কতগুলো সংক্ষিপ্ত প্রশ্নের মাধ্যমে।

তড়িৎ আধান (Electric charge) এর সংজ্ঞা , একক, মাত্রা
তড়িৎ আধান কাকে বলে ?
তড়িৎ আধান হল কোন তড়িৎগ্রস্ত বস্তুর সেই ধর্ম, যে ধর্মের জন্য ওই বস্তুটিকে একটি তড়িৎ চৌম্বক ক্ষেত্রের রাখলে বস্তুটি একটি বল অনুভব করে।
তড়িৎ আধান কে আবিষ্কার করেন?
তড়িৎ এর আবিষ্কারক আগে হয়ে গেলেও ধনাত্মক ঋণাত্মক আধান কথাটি সর্বপ্রথম ব্যবহার করেন বিজ্ঞানী বেঞ্জামিন ফ্রাঙ্কলিন। 1742 খ্রিস্টাব্দে তিনি তড়িৎ নিয়ে গবেষণা শুরু করেছিলেন।
তড়িৎ আধান কয় প্রকার ও কি কি?
প্রকৃতি অনুযায়ী তড়িৎ আধান দুই প্রকার। যথা
- (i) ধনাত্মক তড়িৎ আধান বা পজিটিভ ইলেকট্রিক চার্জ।
- (ii) ঋণাত্বক তড়িৎ আধান বা নেগেটিভ ইলেকট্রিক চার্জ।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে ধনাত্মক কিংবা ঋণাত্বক তড়িৎ আধানের সনাক্তকরণ বা ব্যাখ্যা করা যায় ইলেকট্রনের আধিক্য বা ঘাটতির সাহায্যে।
ধনাত্মক তড়িৎ আধান কাকে বলে?
যদি কোন নিস্তড়িত বস্তু ইলেকট্রন ত্যাগ করে বা হারায় তাহলে সেই বস্তুটিতে যে তড়িৎ আধানের সৃষ্টি হয় তাকেই ধনাত্মক তড়িৎ আধান বলে।
ব্যাটারি চার্জ দেওয়ার সময় ব্যাটারির ধনাত্মক মেরু ইলেকট্রন হারাই ফলে ব্যাটারির ধনাত্মক মেরু ধনাত্মক তড়িৎ গ্রস্ত আধানে আহিত হয়। আবার ঘর্ষণ এর মাধ্যমেও কোন বস্তুকে ধনাত্মক তড়িৎ গ্রস্ত আধানে আহিত করা সম্ভব।
ঋণাত্বক তড়িৎ আধান কাকে বলে?
কোন নিস্তড়িত বস্তু যদি বিশেষ উপায়ে ইলেকট্রন গ্রহণ করে তাহলে সেই বস্তুটি তে যে তড়িৎ আধানের সৃষ্টি হয় তাকেই ঋণাত্বক তড়িৎ আধান বলে।
তড়িৎ আধানের একক কি?
অথবা, তড়িৎ আধানের CGS ও SI পদ্ধতিতে একক লেখ।
উত্তর: তড়িৎ আধানের CGS একক esu (ইলেকট্রোস্ট্যাটিক ইউনিট) বা স্ট্যাট কুলম্ব।
▣ তড়িৎ আধানের SI পদ্ধতিতে একক হল কুলম্ব।
তবে ব্যবহারিক একক হিসেবে তড়িৎ আধানের একক কুলোম্ব ব্যবহার করা হয়। অষ্টাদশ শতাব্দীর ফরাসি পদার্থবিদ চার্লস-অগাস্টিন কুলম্বের নাম অনুসারেই এই একক এর নাম।
তড়িৎ আধানের সিজিএস ও এস আই একক এর মধ্যে সম্পর্ক কি।
অথবা 1 কুলম্ব = কত esu বা স্ট্যাট কুলম্ব?
উত্তর: 1 কুলম্ব = 3× 109 esu
সমজাতীয় তড়িৎ আধান পরস্পরকে বিকর্ষণ ও বিপরীত তড়িৎ আধান পরস্পরকে আকর্ষণ করে। এই আকর্ষণ বিকর্ষণ বল একটি বিশেষ সূত্রের মাধ্যমে নির্ণয় করা যায়। এই সূত্রটি কে কুলম্বের সূত্র বলে।
কুলম্বের সূত্র টি কি?
দুটি স্থির বিন্দু আধান এর মধ্যে কার্যকর আকর্ষণ বিকর্ষণ বল আধান দুটির পরিমাণ এর গুণফলের সমানুপাতিক এবং তাদের মধ্যবর্তী দূরত্বের ব্যস্তানুপাতিক হয়।
ধরা যাক দুটি বিন্দু আধান q1 ও q2 পরস্পর থেকে আর দূরত্বে অবস্থিত। তাহলে কুলম্বের সূত্র অনুযায়ী ওই বিন্দু আধান দুটির মধ্যে আকর্ষণ বল যদি F হয় তাহলে,
F∝q1q2 (যখন দূরত্ব ঠিক থাকে)
F∝ 1/r2 (যখন আধানের পরিমাণ স্থির)
F∝q1q2/r2 (যখন আধান ও দূরত্ব উভয়েই পরিবর্তনশীল)
F=
এক্ষেত্রে k হল একটি ধ্রুবক।এই যুবকটিকে স্থির তড়িৎ বল ধ্রুবক বা কুলম্ব ধ্রুবক বলা হয়।
সিজিএস পদ্ধতিতে কুলম্ব ধ্রুবকের মান কত?
সিজিএস পদ্ধতিতে কুলম্ব ধ্রুবক এর মান 1।
আধান ঘনত্ব কী?
আধান ঘনত্ব: পরিবাহকের পৃষ্ঠের কোন বিন্দুর চতুর্দিকে প্রতি একক ক্ষেত্রফলে যে পরিমাণ চার্জ থাকে তাকে ঐ বিন্দুর আধান ঘনত্ব বলে।
কোনো তলের আধান ঘনত্ব 3 C/m2 বলতে কি বুঝায়?
কোনো তলের আধান ঘনত্ব 3 C/m2 বলতে ঐ তলের প্রতি বর্গমিটার ক্ষেত্রফলে 3 কূলম্ব চার্জ আছে বোঝায়।