অষ্টম শ্রেণি ভূগোল দ্বিতীয় অধ্যায় অস্থিত পৃথিবী | Class VIII Geography chapter 2

অষ্টম শ্রেণি ভূগোল দ্বিতীয় অধ্যায় | অস্থিত পৃথিবী | Class VIII Geography chapter 2 | টেকটনিক প্লেট পাত সীমানা অগ্ন্যুদগম ভূমিকম্প প্রাকৃতিক বিপর্যয়

তুমি কি অষ্টম শ্রেণীর ছাত্র বা ছাত্রী? তোমার কি ভূগোল পড়তে ভালো লাগে? তাহলে আজকের এই পোস্ট তোমার জন্য।

এই অষ্টম শ্রেণীর ভূগোল দ্বিতীয় অধ্যায় – অস্থিত পৃথিবী এর প্রশ্ন উত্তরগুলি তোমাদের পাঠ্য বই অনুযায়ী সুশৃঙ্খলার সাথে লেখা হয়েছে। অভিজ্ঞ শিক্ষক দ্বারা এই প্রশ্নগুলি চয়ন ও উত্তর লেখা হয়েছে।

Thumbnail - অষ্টম শ্রেণি ভূগোল দ্বিতীয় অধ্যায় অস্থিত পৃথিবী


Table of Contents

অষ্টম শ্রেণি ভূগোল দ্বিতীয় অধ্যায় অস্থিত পৃথিবী

1. মহীসঞ্চরণ তত্ত্ব বা Continental drift theory – এর প্রবক্তা কে?

উত্তর – মহীসঞ্চরণ তত্ত্বের প্রবক্তা আলফ্রেড ওয়েগার।

2. প্যানজিয়া কি ?

উত্তর – ৩০ কোটি বছর আগে পৃথিবীর সমস্ত স্থলভাগ একটা বিশাল ভূখণ্ড রূপে অবস্থান করত। এই বিশাল ভূখণ্ডকেই প্যানজিয়া বলে।

3. প্যানথালাসা কি ?

উত্তর – ৩০ কোটি বছর আগে পৃথিবীর সমস্ত স্থলভাগ একটি বিশাল ভূখণ্ডরূপে অবস্থান করত আর এর চারিদিকে ছিল বিশাল মহাসাগর। এই সমগ্র জলভাগকে প্যান্থালাসা বলা হয়।

4. মহাদেশীয় ভূত্বক কি নামে পরিচিত?

উত্তর – SIAL নামে পরিচিত।

5. মহাসাগরীয় ভূত্বক কি নামে পরিচিত?

উত্তর – SIMA নামে পরিচিত।

টেকটনিক প্লেট ( Tectonic plate )

6. পাত সংস্থান তত্ত্বের আবিষ্কার হয় কবে?

উত্তর – 1960 – এর দশকে।

7. টেকটনিক প্লেট গুলি কোন স্তরের উপরে ভাসমান?

উত্তর – ইলেকট্রনিক প্লেট গুলি অ্যাস্থেনোস্ফিয়ার এর উপর ভাসমান।

8. টেকটনিক প্লেট গুলির সঞ্চরণ ঘটে কেন?

উত্তর – টেকনিক প্লেট গুলি পিচ্ছিল অ্যাস্থেনোসিয়ারের উপর অবস্থান করে। অ্যাস্থেনোসিয়ারের পরিচলন স্রোতের জন্য টেকটনিক প্লেট গুলি ধীরগতিতে সঞ্চরণ করছে।

9. পৃথিবীতে মোট কটি বড় টেকটনিক প্লেট রয়েছে ও কি কি?

উত্তর – পৃথিবীতে মোট সাতটি বড় টেকটোনিক প্লেট বা পাত রয়েছে।

এই সাতটি বড় পাত হলো – 

  1. ইউরেশীয় পাত
  2. ভারতীয় পাত
  3. উত্তর আমেরিকা পাত
  4. দক্ষিণ আমেরিকা পাত
  5. প্রশান্ত মহাসাগরীয় পাত
  6. আফ্রিকা পাত
  7. আন্টার্টিকা পাত

10. পৃথিবীতে মোট কটি মাঝারি টেকনিক প্লেট বা পাত রয়েছে?

উত্তর – পৃথিবীতে মোট ৮ টি মাঝারি টেকনিক প্লেট রয়েছে।

11. পৃথিবীতে মোট কয়টি ছোট টেকটনিক প্লেট রয়েছে?

উত্তর – পৃথিবীতে মোট ২০ টি ছোট টেকটনিক প্লেট রয়েছে।

পাত সীমানা বা Tectonic plate boundaries

12. পাত সীমানা কাকে বলে? কয় প্রকার ও কি কি?

উত্তর – টেকটনিক প্লেট বা পাত গুলি সর্বদা ধীরগতিতে সঞ্চরণশীল। দুটি পাতের সংযোগ বা সীমারেখাকে পাত সীমানা বলে।

পাত সীমানা তিন প্রকার। যথা: 

  1. অপসারী পাত সীমান
  2. অভিসারী পাত সীমানা
  3. নিরপেক্ষ পাত সীমান

13. অপসারী পাত সীমানা কাকে বলে? 

উত্তর – যে পাত সীমানা বরাবর টেকটনিক প্লেট দুটি পরস্পর থেকে দূরে সরে যায় তাকে অপসারী পাত সীমানা বলে।

14. অপসারী পাত সীমানায় কি ধরনের ভূমিরূপ গঠিত হয়?

উত্তর – অপসারী পাতসীমানায় ভূমিকম্প অগ্নুৎপাত স্বাভাবিক ঘটনা। এখানে ভু অভ্যন্তরের মেঘমাক ক্রমাগত বেরিয়ে আসে এবং এই মেঘনা শীতল ও কঠিন হয়ে নতুন ভূত্বক বা সমুদ্রের তলদেশে মধ্যামুদ্রিক শৈলশিরা গঠন করে।

15. অপসারী পাত সীমানার আরেক নাম কি এবং কেন?

উত্তর – অপসারী পাত সীমানার আরেক নাম গঠনকারী পাত সীমানা। 

অপসারী পাত সীমানায় নতুন ভূত্বক এবং সমুদ্রের ভিতর সামুদ্রিক শৈলশিরা গঠিত হয়। এই গঠনমূলক প্রভাবের জন্যই অপসারী পাত সীমানার আরেক নাম গঠনকারী পাত সীমানা।

16. অভিসারী পাত সীমানা কাকে বলে?

উত্তর – অনেক সময় দুটো টেকনিক প্লেট পরস্পরের দিকে অগ্রসর হয় এবং পাতের সংঘর্ষ ঘটে। এইরকম পাত সীমানাকে অভিসারী পাত সীমানা বলে।

17. অভিসারী পাতসীমানায় কি ধরনের ভূমিরূপ গঠিত হয়?

উত্তর – অভিসারী পাত সীমানায় দুটি পরস্পরমুখী পাঁচ সামুদ্রিক হলে তাদের ওপরের পলি ভাঁজ খেয়ে দ্বীপ ও দ্বীপপুঞ্জ সৃষ্টি হয়। পাত দুটির একটি সামুদ্রিক ও আরেকটি মহাদেশীয় হলে মাঝের পলি ভাজ খেয়ে ভঙ্গিল পর্বত শ্রেণীর সৃষ্টি হয়। এইরুপ পাতসীমানায় সমুদ্রের তলদেশের ভাঙ্গন দেখা যায় অর্থাৎ সমুদ্র খাত সৃষ্টি হয়।

18. অভিসারী পাত সীমানার আরেক নাম কি এবং কেন?

উত্তর – অভিসারী পাত সীমানার আরেক নাম বিনাশকারী পাত সীমানা।

অভিসারী পাত সীমানায় সমুদ্রের তলদেশের বিনাশ বা ভাঙ্গন দেখা যায় ফলে সমুদ্র খাত সৃষ্টি হয়। তাই অভিসারী পাত সীমানার আরেক নাম বিনাশকারী পাত সীমান।

19. নিরপেক্ষ পাত সীমানা কাকে বলে?

উত্তর – যখন দুটি টেকনিক প্লেট পরস্পর ধর্ষণ করে পাশাপাশি অগ্রসর হয় সেখানে ভূমিকম্প চ্যুতি প্রভৃতি সৃষ্টি হয় কিন্তু এই পাত সীমান্তে পাতের ধ্বংস বা সৃষ্টি কিছুই হয় না এই ধরনের পাত সীমানাকে নিরপেক্ষ পাত সীমানা বলা হয়। যেমন – প্রশান্ত মহাসাগরীয় পাত ও উত্তর আমেরিকা পাত এর সীমানা এর উদাহরণ।

20. নবীন ভঙ্গিল পর্বত কাকে বলে? উদাহরণ দাও।

উত্তর – 1 থেকে 2.5 কোটি বছর আগে যেসব ভঙ্গিল পর্বত গুলির সৃষ্টি হয়েছে তাদের নবীন ভঙ্গিল পর্বত বলে যেমন আন্দিজ, হিমালয়, রকি ইত্যাদি।

21. প্রাচীন ভঙ্গিল পর্বত কাকে বলে? উদাহরণ দাও।

উত্তর – যেসব ভঙ্গিল পর্বত গুলি আজ থেকে ২০ কোটি বছরেরও আগে সৃষ্টি হয়েছে সেই সব পর্বতগুলোকে প্রাচীন ভঙ্গিল পর্বত বলে । যেমন উরাল, আরাবল্লী ইত্যাদি।

22. পাত সঞ্চালন আমরা বুঝতে পারি না কেন?

উত্তর – টেকটনিক প্লেট গুলি বিভিন্ন গতিতে অনুভূমিকভাবে সঞ্চারিত হয়। তবে এই চলন এত ধীর আর সুধর্ম সময় ধরে চলে যে আমরা বুঝতেই পারি না। প্রশান্ত মহাসাগরীয় পাত বছরে দশ সেমি করে পশ্চিমে সরে যাচ্ছে।

23. পার্থক্য লেখ – অপসারী, অভিসারী ও নিরপেক্ষ পাত সঞ্চালন।

উত্তর –

পাত সীমান অপসারী অভিসারী নিরপেক্ষ
পাতের চলন পরস্পর বিপরীতমুখী পরস্পর অভিমুখী পাশাপাশি সঞ্চালন
প্রভাব গঠনমূলক সমুদ্রতলের বিনাশ ভূত্বক সৃষ্টি বা ধ্বংস কিছুই হয় না
ভূমিরূপ সামুদ্রিক শৈলশিরা সৃষ্টি হয় সমুদ্র খাত সৃষ্টি হয় ভূমিকম্প, চ্যুতি সৃষ্টি হয়

অগ্ন্যুদগম ( Volcanism )

24. অগ্ন্যুদগম কাকে বলে?

উত্তর – অভ্যন্তরের গলিত ম্যাগমা গ্যাস ও জলীয় বাষ্প কোন ফাটল বা গহবর এর মধ্য দিয়ে বিস্ফোরণ সহ যখন প্রচন্ড জোরে অথবা দৃঢ়গতিতে ভূপৃষ্ঠে বেরিয়ে আসে সেই প্রক্রিয়াকে অগ্ন্যুদগম বলে।।

25. জাপানের ফুজিয়ামা কি ধরনের পর্বের?

উত্তর – জাপানের ফুজিয়ামা একটি সঞ্চয়জাত বা আগ্নেয় পর্বত।

26. ভারতের একটি আগ্নেয়গিরির উদাহরণ দাও।

উত্তর – ভারতের একটি আগ্নেয়গিরি হলো ব্যারেন।

27. কোন কোন ধরনের পাত সীমানায় বিস্ফোরণ ছাড়াই অগ্ন্যুদগম ঘটতে দেখা যায়?

উত্তর – অপসারী ও নিরপেক্ষ পাত সীমানায়।

28. বিদার অগ্ন্যুদগম কাকে বলে?

উত্তর – অপসারী ও নিরপেক্ষ পাত সীমানায় বিস্ফোরণ ছাড়াই শান্তভাবে অগ্ন্যুদগম ঘটতে দেখা যায় একে বিদার অগ্ন্যুদগম বলে।

29. দাক্ষিণাত্যের মালভূমি কি ধরনের মালভূমি?

উত্তর – দাক্ষিণাত্যের মালভূমি একটি লাভা গঠিত মালভূমি।

30. একটি আকস্মিক অন্তর্জাত প্রক্রিয়ার উদাহরণ দাও।

উত্তর – অগ্ন্যুদগম ও ভূমিকম্প হল আকস্মিক অন্তর্জাত প্রক্রিয়া।

31. একটি বহির্জাত প্রক্রিয়ার উদাহরণ দাও।

উত্তর – সমুদ্রতরঙ্গ ও বায়ু প্রবাহ হল বহির্জাত প্রক্রিয়ার উদাহরণ।

32. ম্যাগমা বলতে কী বোঝো?

উত্তর – ভূ– অভ্যন্তরের গলিত সান্দ্র পদার্থকে ম্যাগমা বলা হয়।

33. লাভা কাকে বলে?

উত্তর – ম্যাগমা ভূপৃষ্ঠের বাইরে নির্গত হলে তাকে লাভা বলা হয়।

আগ্নেয়গিরির শ্রেণীবিভাগ

34. আগ্নেয়গিরি কয় প্রকার ও কি কি?

উত্তর – সক্রিয়তার ভিত্তিতে আগ্নেয়গিরি তিন প্রকার যথা সক্রিয় আগ্নেয়গিরি সুপ্ত আগ্নেয়গিরি ও মৃত আগ্নেয়গিরি।

35. সক্রিয় আগ্নেয়গিরি কাকে বলে? উদাহরণ দাও।

উত্তর – যেসব আগ্নেয়গিরি সৃষ্টি হওয়ার পর থেকে অবিরাম ভাবে অথবা প্রায়শই অগ্নুৎপাত ঘটিয়ে চলেছে তাদের সক্রিয় আগ্নেয়গিরি বলে । যেমন ইতালির ভিসুবিয়াস ও স্ট্রম্বলি।

36. সুপ্ত আগ্নেয়গিরি কাকে বলে ?উদাহরণ দাও।

উত্তর – যেসব আগ্নেয়গিরি একবার অগ্নুৎপাতের পর দীর্ঘকাল নিষ্ক্রিয় থাকে তাদের সুপ্ত আগ্নেয়গিরি বলে যেমন ইন্দোনেশিয়ার ক্রাকাতোয়া।

37. মৃত আগ্নেয়গিরি কাকে বলে ?উদাহরণ দাও।

উত্তর – যেসব আগ্নেয়গিরি গুলো অতি প্রাচীনকালে বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে কিন্তু ভবিষ্যতে অগ্নুৎপাতের সম্ভাবনা প্রায় নেই সেগুলিকে মৃত আগ্নেয়গিরি বলে যেমন মেক্সিকোর পারকুটিন, মায়ানমারের পোপো ইত্যাদি।

38. ভারতের ব্যারেন কি ধরনের আগ্নেয়গিরি?

উত্তর – ভারতের ব্যারেন একটি মৃত আগ্নেয়গিরি।

39. ভারতের ব্যারেন আগ্নেয়গিরিতে ১৯৫২ খ্রিস্টাব্দের পর ১৯৯১ খ্রিস্টাব্দে আবার উত্তর – অগ্নুৎপাত ঘটে দেখা যায় তারপর আর অগ্নুৎপাত দেখা যায়নি।

40. "আ আ" কি ?

উত্তর – ইন্দোনেশিয়ার আগ্নেয়গিরি থেকে গারো একপ্রকার লাভা নির্গত হয় হাওয়াই দ্বীপের ভাষায় এর নাম "আ আ" । এই লাভার দ্রুত খুব বেশি দূর প্রবাহিত হয় না।

41. "পা হো হো" কি ?

উত্তর – হাওয়ায় দ্বীপপুঞ্জের আগ্নেয়গিরিগুলো থেকে অত্যন্ত পাতলা লাভা বেরিয়ে বহুদূর প্রবাহিত হয় হাওয়াই দ্বীপের ভাষায় এর নাম "পা হো হো"। এই লাভা বেরিয়ে বহুদূর প্রবাহিত হয়।

ভূমিকম্প ( earthquake )

42. ক্যালিফোর্নিয়ার সান ফ্রান্সিসকো বসবাস করার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ কেন?

ক্যালিফোর্নিয়ার সান ফ্রান্সিসকো শহরটি সেন এড্রেস চ্যুতির উপর অবস্থিত। এই অঞ্চলে পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরীয় পাত এবং উত্তর আমেরিকা পাশাপাশি অগ্রসর হওয়ার ফলে সংলগ্ন অঞ্চলটা ভূগাঠনিকভাবে অত্যন্ত অস্থির প্রায়ই এখানে ভূ আলোড়ন ভূমিকম্প ঘটতে থাকে।

43. ভূমিকম্পের কারণ লেখ।

উত্তর – ভূমিকম্পের প্রাকৃতিক কারণ: টেকটনিক প্লেট গুলির সঞ্চালনের ফলে ভূমিকম্প সৃষ্টি হয়। পৃথিবীর প্রায় প্রতিটি পাত সীমানায অত্যন্ত ভূমিকম্প প্রবণ।

ভূমিকম্পের কৃত্রিম কারণ: ভূগর্ভে গহ্বর, খনি ও সুড়ঙ্গ খনন, জলাধার নির্মাণ, ধস ও বোমা বিস্ফোরণ – প্রভৃতি কৃত্রিম কারণেও ভূমিকম্প সৃষ্টি হয়।

44. ভূমিকম্পের কেন্দ্র কাকে বলে?

উত্তর – ভূপৃষ্ঠের নিচে ভূ–অভ্যন্তরে যে স্থান থেকে ভূমিকম্পের উদ্ভব হয় তাকে ভূমিকম্পের কেন্দ্র ( Focus) বলে।

45. ভূমিকম্পের উপকেন্দ্র কাকে বলে?

উত্তর – ভূমিকম্পের কেন্দ্র থেকে ঠিক উলঙ্গ দিকে ভূপৃষ্ঠের যে বিন্দুতে প্রথম কম্পন পৌঁছায় তাকে ভূমিকম্পের উপকেন্দ্র বা এপিসেন্টার বলে।

46. ভূমিকম্পের তরঙ্গ কয় প্রকার ও কি কি?

উত্তর – ভূমিকম্পের তরঙ্গ তিন প্রকার যথা– 

  1. প্রাথমিক তরঙ্গ বা P তরঙ্গ
  2. দ্বিতীয় পর্যায়ের তরঙ্গ বা S তরঙ্গ
  3. পৃষ্ঠতরঙ্গ বা L তরঙ্গ

47. ভূমিকম্পের কোন তরঙ্গ সব ধরনের মাধ্যমের মধ্য দিয়ে যেতে পারে?

উত্তর – প্রাথমিক তরঙ্গ বা P তরঙ্গ।

48. ভূমিকম্পের কোন তরঙ্গ কেবলমাত্র কঠিন মাধ্যমের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়?

উত্তর – দ্বিতীয় পর্যায়ের তরঙ্গ বা S  তরঙ্গ।

49. ভূমিকম্পের কোন তরঙ্গের জন্য সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়?

উত্তর – লাভ তরঙ্গ ও র‍্যালে তরঙ্গ এই দুই প্রকার পৃষ্ঠ তরঙ্গের জন্য সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়

50. কোন যন্ত্রের সাহায্যে ভূমিকম্প মাপা হয়?

উত্তর – সিসমোগ্রাফ যন্ত্রের সাহায্যে ভূমিকম্প মাপা হয়।

সিসমোগ্রাফ যন্ত্রের সাহায্যে তুলে আনা তথ্য তুলনা করে ভূমিকম্পের কেন্দ্র উত্তর – উপকেন্দ্রের অবস্থান স্থায়িত্ব ও তীব্রতা সবই নির্ভুলভাবে বলে দেওয়া সম্ভব।

51. কিসের সাহায্যে ভূমিকম্পের তীব্রতা মাপা হয়?

উত্তর – রিকটার স্কেলের সাহায্যে ভূমিকম্পের তীব্রতা মাপা হয়।

52. কিসের সাহায্যে ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতি মাপা হয়?

উত্তর – রিখটার স্কেলের সাহায্যে ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতি মাপা হয়।

53. রিখটার স্কেলের সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ মাত্রা কত?

উত্তর – রিখটার স্কেলের সর্বনিম্ন মাত্রা শুন্য এবং সর্বোচ্চ মাত্রা ১০।

54. ভূমিকম্প প্রবণ অঞ্চল কাকে বলে?

উত্তর – অভিসারী অপসারী ও নিরপেক্ষ সমস্ত ধরনের পাত সীমানায় ভূমিকম্প হলেও অভিসারী পাত সীমানায় তীব্র ভূমিকম্প হয়ে থাকে । এইসব অঞ্চল কে ভূমিকম্প প্রবণ অঞ্চল বলে। যেমন – হিমালয় ও আল্প পার্বত্য অঞ্চলে।

55. পৃথিবীর সমস্ত নবীন ভঙ্গিল পার্বত্য অঞ্চল ভূমিকম্প প্রবণ কেন?

উত্তর – পৃথিবীর প্রায় সমস্ত নবীন ভঙ্গিল পার্বত্য অঞ্চল অভিসারী পাত সীমানায় অবস্থিত। অভিসারী পাত সীমানায় সংঘটিত হওয়া সংঘর্ষের ফলে প্রবল ভূমিকম্পের সৃষ্টি হয়।

56. প্রশান্ত মহাসাগরীয় অগ্নি বলয় কাকে বলে?

উত্তর – পৃথিবীর অধিকাংশ জীবন্ত আগ্নেয়গিরি প্রশান্ত মহাসাগরকে বলয়ের মত ঘিরে রেখেছে। এইজন্য প্রশান্ত মহাসাগরের দুদিকের উপকূলের আগ্নেয়গিরি বলয় কে প্রশান্ত মহাসাগরীয় অগ্নি বলয় বা Pacific ring of fire বলা হয়।

প্রাকৃতিক বিপর্যয় ও মানুষের জীবন

57. ভারতের দাক্ষিণাত্য মালভূমিতে কোন ধরনের মৃত্তিকা দেখা যায়?

উত্তর – উর্বর কৃষ্ণ মৃত্তিকা বা black soil ।

58. ভূমিকম্পের কুপ্রভাব লেখো।

উত্তর – ভূমিকম্পের কুপ্রভাব গুলি হল নিম্নরূপ –

  • ভূমিকম্পের আগাম সতর্কবার্তা দিয়ে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কমানোর কোন সুযোগ থাকে না। তাই আকস্মিক ভূমিকম্পে ঘরবাড়ি ভেঙে চাপা পড়ে প্রচুর প্রাণহানি হয়।
  • বড় বড় ধস ফাটল তৈরি হওয়ায় পরিবহন ও যোগাযোগ ব্যবস্থা নষ্ট হয়ে যায়।
  • বড় জলাধারের চাপে ভূমিকম্প হলে বাঁধ ভেঙে জলাধারের জল বেরিয়ে গিয়ে সংলগ্ন অঞ্চলে হঠাৎ বন্যা হয়।
  • সমুদ্র তলদেশে বা উপকূল অঞ্চলে ভূমিকম্পের ফলে ঢেউয়ের উচ্চতা বেড়ে প্রবল শক্তিতে উপকূল অঞ্চলে সুনামি সৃষ্টি হয় এর ফলে বহু জীবনহানি ও ক্ষয়ক্ষতি হয়।

২০০৪ সালে ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রা দ্বীপের কাছে ভারত মহাসাগরীয় পাত ও বার্মা পাঠের ফলে রিখটার স্কেলে ৮ দশমিক নয় মাত্রায় ভূমিকম্প হয় এবং ভয়ংকর জলোচ্ছ্বাসে ভারতসহ দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার ১১ টা দেশে বহু ক্ষয়ক্ষতি ও তিন লক্ষ প্রাণহানি হয়।

59. ভূমিকম্পের সময় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গুলি কি?

উত্তর – ভূমিকম্পের সমবায় প্রয়োজনীয় নিম্নের পদক্ষেপগুলি নেওয়া উচিত -

  • যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বাড়ি বা স্কুল থেকে বেরিয়ে কোন খোলা জায়গায় যাওয়া।
  • যদি খোলা জায়গায় বেরিয়ে যাওয়া সম্ভব না হয় তবে বাড়ির মধ্যে দ্রুত কোন টেবিল বা শক্ত আসবাবের তলায় ঢুকে পড়া।
  • ভূমিকম্প চলাকালীন বহুতল বাড়ির ঝুল বারান্দা ও সিড়ির লিস্ট ইত্যাদি ব্যবহার এড়িয়ে চলা।
  • বাড়ি থেকে বেরোবার আগে সম্ভব হলে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সঙ্গে নিয়ে নেওয়া।
তথ্য সূত্র – আমাদের পৃথিবী - মধ্যশিক্ষা পর্ষদ – অষ্টম শ্রেণির পাঠ্যবই

Post a Comment

Please Comment , Your Comment is Very Important to Us.