দশম শ্রেণীর জীবন বিজ্ঞান মডেল অ্যাক্টিভিটি টাস্ক 2022 এর পার্ট 9 এর প্রশ্ন উত্তর নিয়ে আজকের পর্বে আমরা আলোচনা করব। আশা করি তোমাদের class 10 Life science model activity task 2022 part 9 তোমাদের খুব ভালো লাগবে। তাহলে চলো শুরু করা যাক -
মডেল অ্যাক্টিভিটি টাস্ক
দশম শ্রেণি
১. প্রতিটি প্রশ্নের সঠিক উত্তরটি নির্বাচন করে তার ক্রমিক সংখ্যাসহ বাক্যটি সম্পূর্ণ করে লেখো : ১×৩=৩
১.১ বৃক্কীয় নালিকায় জলের পুনঃশোষণ ঘটাতে সাহায্য করে যে হরমোন তা নির্বাচন করো –
(ক) ACTH
(খ) GH
(গ) TSH
(ঘ) ADH
উত্তর: (ঘ) ADH
বিঃ দ্রঃ - ADH এর পুরো কথা অ্যান্টিডাইইউরেটিক হরমোন।
১.২ নীচের যে জোড়টি সঠিক নয় তা শনাক্ত করো
(ক) ফোটোন্যাস্টিক চলন – সূর্যমুখী
(খ) থার্মোন্যাস্টিক চলন – টিউলিপ
(গ) সিসমোন্যাস্টিক চলন – পদ্ম
(ঘ) কেমোন্যাস্টিক চলন– সূর্যশিশির
উত্তরঃ (গ) সিসমোন্যাস্টিক চলন – পদ্ম
১.৩ ইস্ট্রোজেন হরমোন ক্ষরণে সাহায্য করে যে হরমোন সেটি বেছে নাও —
(ক) GH
(খ) FSH
(গ) ADH
(ঘ) ACTH
উত্তরঃ (খ) FSH
বিঃ দ্রঃ - FSH এর পুরো কথা ফলিক্যাল-স্টিমুলেটিং-হরমোন।
২. নীচের বাক্যগুলো সত্য অথবা মিথ্যা নিরূপণ করো : ১x8=8
২.১ গ্রোথ হরমোনের অতিক্ষরণের ফলে বামনত্ব দেখা যায়।
উত্তরঃ বিবৃতিটি মিথ্যা ।
২.২ ফোটোট্যাকটিক চলনে ক্ল্যামাইডোমোনাসের দেহের সামগ্রিক স্থান পরিবর্তন ঘটে।
উত্তরঃ বিবৃতিটি সত্য ।
২.৩ আগাছানাশক হিসেবে কৃত্রিম অক্সিনের ভূমিকা আছে।
উত্তরঃ বিবৃতিটি সত্য ।
২.৪ হরমোন ক্রিয়ার পর ধ্বংস হয় না।
উত্তরঃ বিবৃতিটি মিথ্যা ।
৩. দুই-তিন বাক্যে উত্তর দাও : ২×8 = ৮
৩.১ ‘উদ্ভিদের কাণ্ডে আলোক অনুকূলবর্তী চলন দেখা যায়’ – একটি পরীক্ষার সাহায্যে বক্তব্যটি ব্যাখ্যা করো।
উত্তর: একটি জলপূর্ণ কাচের বোতলে কর্কের সাহায্যে একটি চারা গাছ লাগানো হলো। এবার বোতলসহ চারাগাছটি যদি অন্ধকার ঘরে একটি জানালার পাশে রেখে জানালার একটি পাল্লা খুলে রাখা হয় তবে কয়েকদিন পর দেখা যাবে চারা গাছের ডালপালা জানালার দিকে অর্থাৎ আলোক উৎসের দিকে বেঁকে গেছে। এর থেকে প্রমাণিত হয় যে উদ্ভিদের কান্ডের আলোক অনুকূলবর্তি চলন দেখা যায়।
৩.২ নিম্নলিখিত বৈশিষ্ট্যের ওপর ভিত্তি করে ট্রপিক ও ন্যাস্টিক চলনের পার্থক্য নিরূপণ করো :
- উদ্দীপকের প্রভাব
- অক্সিন হরমোনের প্রভাব
বৈশিষ্ট্য | ট্রপিক চলন | ন্যাস্টিক চলন |
উদ্দীপকের প্রভাব | ট্রপিক চলন কেবলমাত্র উদ্দীপকের গতিপথ দ্বারা প্রভাবিত হয়। | ন্যাস্টিক চলন উদ্দীপকের উৎসের তীব্রতা দ্বারা প্রভাবিত হয়। |
অক্সিন হরমোনের প্রভাব | ট্রপিক চলনে অক্সিন হরমোনের বিশেষ প্রভাব আছে। | ন্যাস্টিক চলন এর অক্সিন হরমোনের কোনো প্রভাব নেই। |
৩.৩ মানবদেহে টেস্টোস্টেরন হরমোনের ভূমিকা বিশ্লেষণ করো।
উত্তর: মানব দেহে টেস্টোস্টেরন হরমোনের ভূমিকা:
শুক্রাণু উৎপাদন: টেস্টোস্টেরন বয়সন্ধিকালে ও তার পরবর্তী সময়ে শুক্রাশয় এর সেমিনিফেরাস নালিকাতে শুক্রাণু উৎপাদন নিয়ন্ত্রন করে।
আনুষাঙ্গিক যৌন গ্রন্থি ও অঙ্গের বিকাশ: এই হরমোন পুরুষদের বিভিন্ন অনুষঙ্গের যৌন গ্রন্থি ও অঙ্গের বৃদ্ধি ও বিকাশ নিয়ন্ত্রণ করে।
গৌণ যৌন বৈশিষ্ট্য: পুরুষদের বিভিন্ন গৌণ যৌন বৈশিষ্ট্য যেমন দাড়ি গোফ গজানো, পুরুষালী কণ্ঠস্বর সৃষ্টি - ইত্যাদির পরিস্ফুটন ঘটানো।
পেশী ও অস্থির বৃদ্ধি : টেস্টোস্টেরন হরমোন বয়সন্ধিকাল ও তার পরবর্তী সময়ে পুরুষ দেহের অস্থি পেশী ও অন্যান্য কলা কোষে প্রোটিন সংশ্লেষণ ত্বরান্বিত করে পুরুষ দেহকে সুগঠিত করে।
বিপাক ক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ: টেস্টোস্টেরন পুরুষদের মৌল বিপাক হার ( BMR) বাড়ায়।
৩.৪ জিব্বেরেলিন হরমোনের উৎস উল্লেখ করো।
উত্তর: জিব্বেরেলিন হরমোন এর উৎস: জিব্বেরেলিন হরমোন অঙ্কুরিত বীজ , পরিণত বীজপত্র , মুকুল ও পাতার বর্ধিষ্ণু অঞ্চল প্রভৃতি থেকে উৎপন্ন হয়।
৪. নীচের প্রশ্নটির উত্তর দাও :
৪.১ উদাহরণের সাহায্যে হরমোনের ফিডব্যাক নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতিটি আলোচনা করো।
“ইনসুলিন আর গ্লুকাগনের ক্রিয়া পরস্পরের বিপরীতধর্মী" – বক্তব্যটির যথার্থতা ব্যাখ্যা করো।
উত্তর:
হরমোনের ফিডব্যাক নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি: সাধারনত কোনো হরমোনের ক্ষরণ মাত্রা অপর একটি হরমোনের ক্ষরণমাত্রার ওপর নির্ভর করে। একে ফিডব্যাক নিয়ন্ত্রণ বলা হয়।
একটি উদাহরণের সাহায্যে বোঝানো হলো:
মানুষের রক্তে T3 ও T4 এর মাত্রা স্বাভাবিকের থেকে বৃদ্ধি পেলে এগুলি মস্তিষ্কের হাইপোথ্যালামাস কে নেগেটিভ সিগনাল পাঠায়। তার ফলে হাইপোথ্যালামাসের TRH (থাইরোট্রপিন রিলিজিং হরমোন) এর সংশ্লেষক ক্ষরণ ব্যাহত হয়। এর ফলে অগ্র পিটুইটারি গ্রন্থি থেকে TSH (থাইরয়েড স্টিমুলেটিং হরমোন) এর ক্ষরণ মাত্রা হ্রাস পায়। একে ঋণাত্মক ফিডব্যাক বলে। রক্তে TSH এর মাত্রা কমে গেলে অধিক মাত্রায় T3 ও T4 সংশ্লেষে বাধা তৈরি হয়। আবার বিপরীতক্রমে রক্তে T3 ও T4 এর মাত্রা স্বাভাবিকের থেকে কম হলে সম্পূর্ণ বিপরীত ঘটনা ঘটে।
ইনসুলিন আর গ্লুকাগন এর ক্রিয়া পরস্পরের বিপরীতধর্মী:
রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ বাড়লে গ্লাইকোজেনেসিস এর মাধ্যমে গ্লুকোজকে গ্লাইকোজেনে পরিণত করে গ্লুকোজের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করে।
এটি ইনসুলিন এর বিপরীত ক্রিয়া করে। রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ হ্রাস পেলে , গ্লাইকোজেন, প্রোটিন, ফ্যাট ইত্যাদির জারণ দ্বারা গ্লুকোজ প্রস্তুত করে রক্তে এর পরিমাণ বাড়ায়।
গ্লাইকোজেনেসিস এর মাধ্যমে যকৃত পেশিতে গ্লুকোজকে গ্লাইকোজেন রূপে সঞ্চয় করা এবং প্রয়োজন অনুসারে গ্লুকোজ এর জারণ প্রভাবিত করা ইনসুলিনের অন্যতম কাজ। গ্লাইকোজেন থেকে গ্লুকোজ উৎপাদনে ইনসুলিন বাধা দেয়। অন্যদিকে গ্লুকাগন রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা হ্রাস পেলে যকৃতে সঞ্চিত গ্লাইকোজেনকে ভেঙে গ্লুকোজে পরিণত করে। ফলে রক্তে শর্করার মাত্রা বৃদ্ধি পায়। এই হরমোন পেশির গ্লাইকোজেন কে ভাঙতে সাহায্য করে না।
আশা করি আজকের দশম শ্রেণীর মডেল অ্যাক্টিভিটি টাস্ক জীবনবিজ্ঞান Part 9 তোমাদের পছন্দ হয়েছে। সমস্ত প্রশ্ন উত্তর উত্তর ভালোভাবে বোঝার জন্য নিচের ভিডিওটি দেখতে পারো।