Posts

আগে চাই জাতীয় বেকারত্ব পঞ্জি !

মোদী সরকারের বুক ঠুকে করা সিএএ ও জাতীয় নাগরিক পঞ্জির (এনআরসি)ঘোষণা ঘুম কেড়েছে বহু সাধারণ মানুষের। আসমুদ্রহিমাচল প্রতিবাদে উত্তাল। প্রতিবাদের মিছিলে পা মিলিয়েছেন সাধারণ মানুষ, ছাত্রসমাজ, বিদ্বজ্জন থেকে অর্থনীতির অধ্যাপক। অনেকেরই যুক্তির বুনোটে ক্রমশ দানা বাঁধছে পাল্টা প্রশ্ন। তা হল, যে সরকার দেশ-দশের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে নাগরিক পঞ্জি তৈরিতে এত ব্যাকুল, সকলের মুখে ভাত জোগানোর প্রতিজ্ঞায় তারা কর্মহীনদের তালিকা তৈরিতে আগ্রহী নয় কেন ? কর্মসংস্থানের ছবি বিবর্ণ।দেশে বেকারত্বের হার সাড়ে চার দশকে সর্বোচ্চ বলে মেনে নিয়েছে সরকারি সমীক্ষাই। আর্থিক বৃদ্ধির গতি লক্ষ্যনীয়ভাবে নিম্নগামী। বিগত কয়েক মাসে টানা বেড়ে চলেছে খুচরো মূল্যবৃদ্ধি। নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস অগ্নিমূল্য।থলি হাতে বাজারে গেলেই হাড়েহাড়ে তা মালুম হচ্ছে। আম আদমির নাভিশ্বাস ওঠার জোগাড়। আর এ-দিকে মোদি-অমিত শাহ যুগলবন্দী সিএএ ও এনআরসির সুরে তাল ঠুকছে। প্রথম শ্রেণির এক বাংলা দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশ, জাতীয় নমুনা সমীক্ষা দফতরের (এনএসএসও) পরিসংখ্যানেও নোটবন্দির ঠিক পরে ২০১৭ সালে বেকারত্বের হার সাড়ে চার দশকে সর্বোচ্চ (৬.১%)। গ্রামে প্রকৃত (মূল্যবৃদ্ধি বাদে) আয় বাড়ছে না বললেই চলে।কম বেতনের সরকারি চাকরিতেও উপচে পড়ছে পিএইচডি, এমবিএ, ইঞ্জিনিয়ার, স্নাতকোত্তরদের আবেদন।নতুন কাজের সুযোগ তৈরি তো দূর, গাড়ি শিল্প-সহ বেশ কিছু ক্ষেত্রে কাজ গিয়েছে কয়েক লক্ষ মানুষের। সিএমআইই-র পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এই মুহূর্তে দেশে কর্মহীন প্রায় ৯ কোটি। কিন্তু যোগ্যতার তুলনায় কম দক্ষতার কাজ করতে বাধ্য হওয়ার সমস্যার কবলে অন্তত ২০-২২ কোটি মানুষ বলে বিশেষজ্ঞদের অনুমান। কলকারখানা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে একের পর এক। ফসলের নায্য মূল্য নেই। শ্রমিক, কৃষক গত্যন্তর না দেখে আত্মহত্যার পথ বেছে নিতে বাধ্য হচ্ছেন। গত ৩ জানুয়ারি ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরো (এনসিআরবি) প্রকাশিত তথ্য থেকে পাওয়া গিয়েছে বেকারত্ব এবং দারিদ্র্যের শিকার হয়ে প্রতিদিন কমপক্ষে ১০ জন ভারতীয় আত্মহত্যা করেছে গত ২০১৮ সালে। এদের মধ্যে গড়ে নয় জন পুরুষ এবং এক মহিলা। অন্য দিকে কমপক্ষে ২০ জন এই দুই কারণে মাদক ও অ্যালকোহলে আসক্তির কারণে নিজেকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়েছেন। বেকারত্ব, দারিদ্র্য এবং আসক্তি, ২০১৪ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে, ভারত এই তিনটি কারণে মোট ৪৫,৭৪৩ জনকে হারিয়েছে। চাকরি বা সন্তোষজনক চাকরি পাওয়া নিয়ে উচ্চশিক্ষিত তরুণদের মধ্যে হতাশা ক্রমেই বাড়ছে। দেশে বেসরকারি খাত কাঙ্ক্ষিত হারে বাড়ছে না, তাই কর্মসংস্থানে মন্দা। দেশে শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা বিপুল। বেসরকারি খাতের চাকরি বাড়ন্ত বলে তরুণেরা হন্যে হয়ে সরকারি চাকরির পেছনে ছুটছেন। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের তো নাগরিকদের কর্মসংস্থান নিশ্চিত করার কথা। কিন্তু বাস্তব চিত্র উল্টো। অনেকেই মনে করছেন, কাশ্মীর থেকে ৩৭০ অনুচ্ছেদ প্রত্যাহার, তারপর এনআরসি, সিএএ নিয়ে হট্টগোলের মাঝে 'নিখোঁজ' হয়ে গিয়েছে শিক্ষিত যুবক-যুবতীদের কর্মসংস্থানের মতো গুরুতর বিষয়। আচ্ছে দিনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় এসেছিলেন নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু ৬ বছর পর পাকিস্তান, হিন্দু-মুসলিম ছাড়া আর অচ্ছে দিন মুখেই আনছেন না প্রধানমন্ত্রী। বিরোধীদের দাবি, দেশের আর্থিক অবস্থা থেকে মুখ ঘোরাতেই বিজেপি মেরুকরণের রাজনীতি করছে। একদিকে হিন্দুত্ববাদী জাতীয়তাবাদের ঢক্কানিনাদ, অন্যদিকে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে প্রতিযোগিতা - কে কত বড় সেকুলার সেটা প্রমাণ করার তাগিদ, এরই মাঝে পিষ্ট হচ্ছে সাধারণ মানুষ। সিএএ, এনআরসি বিরোধিতা করার ইস্যুতে বিরোধী রাজনৈতিকদলগুলো কতটা আন্তরিক, তা নিয়ে তৈরি হচ্ছে ধোঁয়াশার জাল। অনেকে মনে করছেন, রাজনৈতিক দলগুলো আসলে ব্যস্ত নিজেদের ভোটব্যাঙ্ক মজবুত করতে। তারা ঘোলা জলে মাছ ধরতে নেমে পড়েছে। আপামর সাধারণ মানুষের কাছে রাজনৈতিক দলগুলোর স্বচ্ছ গ্রহণযোগ্যতা প্রশ্নচিহ্নের মুখে। তাই প্রতিবাদ, আন্দোলনের রাশ রাজনৈতিক দলগুলোর হাতে নেই। আন্দোলনের লাগাম এখন যুব-ছাত্রসমাজের হাতে। ভারতীয় রাজনীতিতে এটা একটা উল্লেখযোগ্য বাঁক। সিএএ ও এনআরসি ইস্যুতে আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে দেশের রাজনীতি নতুন সমীকরণের সামনে দাঁড়িয়ে। জেএনইউয়ের প্রতিবাদ মিছিল থেকে জামিয়ার সমাবেশ— প্রায় সর্বত্র কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় পেরিয়ে কাজ না-পাওয়ার আশঙ্কা উঠে এসেছে পড়ুয়াদের স্লোগানে। এনআরসি নয়, এনআরইউ (ন্যাশনাল রেজিস্ট্রার অব আনএমপ্লয়মেন্ট বা জাতীয় বেকারত্ব পঞ্জিকরণ) তৈরিই এখন দিল্লির পাখির চোখ হওয়া উচিত, মত অনেকের। এক হাজার শূন্যপদের বিপরীতে এক লাখ মানুষের আবেদন পড়লে তা হতাশাজনক চিত্র। ভারতের অর্থনীতির এখন অন্যতম বড় সমস্যা বেকারত্ব। মানুষ চাকরি চান। তাই তার সুযোগ তৈরি করতে হবে। এটাই সরকারের অন্যতম প্রধান কাজ। এই প্রসঙ্গে শিকাগোতে দিন কয়েক আগে নোবেলজয়ী মার্কিন অর্থনীতিবিদ পল ক্রুগম্যান বলেন, দেশের প্রবৃদ্ধির হার এমন হওয়া উচিত, যাতে তা বিপুলসংখ্যক কর্মসংস্থান তৈরি করে। যারা স্কুল-কলেজ থেকে বেরোচ্ছেন, তারা যেন চাকরির সুযোগ পান। শ্রমিক-কৃষকদের মুখে হাসি ফোটাতে হবে। সরকারের ভূমিকা ছাড়া এই বিপুল মানুষের কর্মসংস্থান নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। এর জন্য দরকার যথাযথ রাষ্ট্রীয় নীতি। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র শুধু বিশেষ গোষ্ঠীর স্বার্থ দেখবে না, তাকে সবারটাই দেখতে হবে। সরকারের লক্ষ্য রাখতে হবে, তরুণ প্রজন্ম দেশের সম্পদ হতে পারে, তা যেন ‘অভিশাপ’ না হয়ে দাঁড়ায়। সরকারকে দেখতে হবে, কর্মমুখী শিক্ষাব্যবস্থায় ত্রুটি আছে কি না। বিশ্বায়নের যুগে দক্ষতা ও যোগ্যতা ছাড়া বাজারে টিকে থাকা যাবে না, তা নিশ্চয়ই বলার অপেক্ষা রাখে না। তাই সরকারকে বৃত্তিমূলক কর্মমুখী শিক্ষাব্যবস্থাকে যুগোপযোগী করতে হবে। ভোটার কার্ড, রেশন কার্ড, আধার কার্ড, প্যান কার্ড ইত্যাদি কোনটাই দেশের কর্মসংস্থানের সুস্পষ্ট চিত্র তুলে ধরে না। তাই সবার আগে প্রয়োজন পূর্ণাঙ্গ বেকারত্ব-পঞ্জি তৈরি এবং নিয়মিত তাতে নতুন পরিসংখ্যান যোগ করার পক্ষেই সওয়াল করছেন অনেক বিশেষজ্ঞ। কেন্দ্রীয় সরকারকে অবিলম্বে সকলের কর্মসংস্থান সুনিশ্চিত করার ব্যাপারে ইতিবাচক ভূমিকা পালন করা প্রয়োজন। সবার পেটে ভাত, সবার হাতে কাজ চাই - এটাই এখন আম আদমির স্লোগানের অভিমুখ।

করিমপুর, নদিয়া, দীপক সাহা: মোদী সরকারের বুক ঠুকে করা সিএএ ও জাতীয় নাগরিক পঞ্জির (এনআরসি)ঘোষণা ঘুম কেড়েছে বহু সাধারণ মানুষের। আসমুদ্রহিমাচল প্রতিবাদে উত্তাল। প্রতিবাদের মিছিলে পা মিলিয়েছেন সাধারণ মানুষ, ছাত্রসমাজ, বিদ্বজ্জন থেকে অর্থনীতির অধ্যাপক। অনেকেরই যুক্তির বুনোটে ক্রমশ দানা বাঁধছে পাল্টা প্রশ্ন। তা হল,
 যে সরকার দেশ-দশের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে নাগরিক পঞ্জি তৈরিতে এত ব্যাকুল, সকলের মুখে ভাত জোগানোর প্রতিজ্ঞায় তারা কর্মহীনদের তালিকা তৈরিতে আগ্রহী নয় কেন ?
তৃতীয় পক্ষের চিত্র রেফারেন্স
কর্মসংস্থানের ছবি বিবর্ণ।দেশে বেকারত্বের হার সাড়ে চার দশকে সর্বোচ্চ বলে মেনে নিয়েছে সরকারি সমীক্ষাই। আর্থিক বৃদ্ধির গতি লক্ষ্যনীয়ভাবে নিম্নগামী। বিগত কয়েক মাসে টানা বেড়ে চলেছে খুচরো মূল্যবৃদ্ধি। নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস অগ্নিমূল্য।থলি হাতে বাজারে গেলেই হাড়েহাড়ে তা মালুম হচ্ছে। আম আদমির নাভিশ্বাস ওঠার জোগাড়। আর এ-দিকে মোদি-অমিত শাহ যুগলবন্দী সিএএ ও এনআরসির সুরে তাল ঠুকছে।                              
প্রথম শ্রেণির এক বাংলা দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশ, জাতীয় নমুনা সমীক্ষা দফতরের (এনএসএসও) পরিসংখ্যানেও নোটবন্দির ঠিক পরে ২০১৭ সালে বেকারত্বের হার সাড়ে চার দশকে সর্বোচ্চ (৬.১%)। গ্রামে প্রকৃত (মূল্যবৃদ্ধি বাদে) আয় বাড়ছে না বললেই চলে।কম বেতনের সরকারি চাকরিতেও উপচে পড়ছে পিএইচডি, এমবিএ, ইঞ্জিনিয়ার, স্নাতকোত্তরদের আবেদন।নতুন কাজের সুযোগ তৈরি তো দূর, গাড়ি শিল্প-সহ বেশ কিছু ক্ষেত্রে কাজ গিয়েছে কয়েক লক্ষ মানুষের। সিএমআইই-র পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এই মুহূর্তে দেশে কর্মহীন প্রায় ৯ কোটি। কিন্তু যোগ্যতার তুলনায় কম দক্ষতার কাজ করতে বাধ্য হওয়ার সমস্যার কবলে অন্তত ২০-২২ কোটি মানুষ বলে বিশেষজ্ঞদের অনুমান। কলকারখানা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে একের পর এক। ফসলের নায্য মূল্য নেই। শ্রমিক, কৃষক গত্যন্তর না দেখে আত্মহত্যার পথ বেছে নিতে বাধ্য হচ্ছেন।


গত ৩ জানুয়ারি ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরো (এনসিআরবি) প্রকাশিত তথ্য থেকে পাওয়া গিয়েছে বেকারত্ব এবং দারিদ্র্যের শিকার হয়ে প্রতিদিন কমপক্ষে ১০ জন ভারতীয় আত্মহত্যা করেছে গত ২০১৮ সালে। এদের মধ্যে গড়ে নয় জন পুরুষ এবং এক মহিলা। অন্য দিকে কমপক্ষে ২০ জন এই দুই কারণে মাদক ও অ্যালকোহলে আসক্তির কারণে নিজেকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়েছেন। বেকারত্ব, দারিদ্র্য এবং আসক্তি, ২০১৪ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে, ভারত এই তিনটি কারণে মোট ৪৫,৭৪৩ জনকে হারিয়েছে।

Unemployment and farmers suicide

চাকরি বা সন্তোষজনক চাকরি পাওয়া নিয়ে উচ্চশিক্ষিত তরুণদের মধ্যে হতাশা ক্রমেই বাড়ছে। দেশে বেসরকারি খাত কাঙ্ক্ষিত হারে বাড়ছে না, তাই কর্মসংস্থানে মন্দা। দেশে শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা বিপুল। বেসরকারি খাতের চাকরি বাড়ন্ত বলে তরুণেরা হন্যে হয়ে সরকারি চাকরির পেছনে ছুটছেন। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের তো নাগরিকদের কর্মসংস্থান নিশ্চিত করার কথা। কিন্তু বাস্তব চিত্র উল্টো।     
অনেকেই মনে করছেন, কাশ্মীর থেকে ৩৭০ অনুচ্ছেদ প্রত্যাহার, তারপর এনআরসি, সিএএ নিয়ে হট্টগোলের মাঝে 'নিখোঁজ' হয়ে গিয়েছে শিক্ষিত যুবক-যুবতীদের কর্মসংস্থানের মতো গুরুতর বিষয়। আচ্ছে দিনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় এসেছিলেন নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু ৬ বছর পর পাকিস্তান, হিন্দু-মুসলিম ছাড়া আর অচ্ছে দিন মুখেই আনছেন না প্রধানমন্ত্রী। বিরোধীদের দাবি, দেশের আর্থিক অবস্থা থেকে মুখ ঘোরাতেই বিজেপি মেরুকরণের রাজনীতি করছে।
একদিকে হিন্দুত্ববাদী জাতীয়তাবাদের ঢক্কানিনাদ, অন্যদিকে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে প্রতিযোগিতা - কে কত বড় সেকুলার সেটা প্রমাণ করার তাগিদ, এরই মাঝে পিষ্ট হচ্ছে সাধারণ মানুষ। সিএএ, এনআরসি বিরোধিতা করার ইস্যুতে বিরোধী রাজনৈতিকদলগুলো কতটা আন্তরিক, তা নিয়ে তৈরি হচ্ছে ধোঁয়াশার জাল। অনেকে মনে করছেন, রাজনৈতিক দলগুলো আসলে ব্যস্ত নিজেদের ভোটব্যাঙ্ক মজবুত করতে। তারা ঘোলা জলে মাছ ধরতে নেমে পড়েছে। আপামর সাধারণ মানুষের কাছে রাজনৈতিক দলগুলোর স্বচ্ছ গ্রহণযোগ্যতা প্রশ্নচিহ্নের মুখে। তাই প্রতিবাদ, আন্দোলনের রাশ রাজনৈতিক দলগুলোর হাতে নেই। আন্দোলনের লাগাম এখন যুব-ছাত্রসমাজের হাতে। ভারতীয় রাজনীতিতে এটা একটা উল্লেখযোগ্য বাঁক। সিএএ ও এনআরসি ইস্যুতে আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে দেশের রাজনীতি নতুন সমীকরণের সামনে দাঁড়িয়ে। 

Image against caa
তৃতীয় পক্ষের চিত্র রেফারেন্স
                 
জেএনইউয়ের প্রতিবাদ মিছিল থেকে জামিয়ার সমাবেশ— প্রায় সর্বত্র কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়  পেরিয়ে কাজ না-পাওয়ার আশঙ্কা উঠে এসেছে পড়ুয়াদের স্লোগানে। এনআরসি নয়, এনআরইউ (ন্যাশনাল রেজিস্ট্রার অব আনএমপ্লয়মেন্ট বা জাতীয় বেকারত্ব পঞ্জিকরণ)  তৈরিই এখন দিল্লির পাখির চোখ হওয়া উচিত, মত অনেকের। 
এক হাজার শূন্যপদের বিপরীতে এক লাখ মানুষের আবেদন পড়লে তা হতাশাজনক চিত্র। ভারতের অর্থনীতির এখন অন্যতম বড় সমস্যা বেকারত্ব। মানুষ চাকরি চান। তাই তার সুযোগ তৈরি করতে হবে। এটাই সরকারের অন্যতম প্রধান কাজ। এই প্রসঙ্গে শিকাগোতে দিন কয়েক আগে নোবেলজয়ী মার্কিন অর্থনীতিবিদ পল ক্রুগম্যান বলেন,
দেশের প্রবৃদ্ধির হার এমন হওয়া উচিত, যাতে তা বিপুলসংখ্যক কর্মসংস্থান তৈরি করে। যারা স্কুল-কলেজ থেকে বেরোচ্ছেন, তারা যেন চাকরির সুযোগ পান। শ্রমিক-কৃষকদের মুখে হাসি ফোটাতে হবে। 
   সরকারের ভূমিকা ছাড়া এই বিপুল মানুষের কর্মসংস্থান নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। এর জন্য দরকার যথাযথ রাষ্ট্রীয় নীতি। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র শুধু বিশেষ গোষ্ঠীর স্বার্থ দেখবে না, তাকে সবারটাই দেখতে হবে। সরকারের লক্ষ্য রাখতে হবে, তরুণ প্রজন্ম দেশের সম্পদ হতে পারে, তা যেন ‘অভিশাপ’ না হয়ে দাঁড়ায়। সরকারকে  দেখতে হবে, কর্মমুখী শিক্ষাব্যবস্থায় ত্রুটি আছে কি না। বিশ্বায়নের যুগে দক্ষতা ও যোগ্যতা ছাড়া বাজারে টিকে থাকা যাবে না, তা নিশ্চয়ই বলার অপেক্ষা রাখে না। তাই সরকারকে বৃত্তিমূলক কর্মমুখী শিক্ষাব্যবস্থাকে যুগোপযোগী করতে হবে।
               
ভোটার কার্ড, রেশন কার্ড, আধার কার্ড, প্যান কার্ড ইত্যাদি কোনটাই দেশের কর্মসংস্থানের সুস্পষ্ট চিত্র তুলে ধরে না। তাই সবার আগে প্রয়োজন পূর্ণাঙ্গ বেকারত্ব-পঞ্জি তৈরি এবং নিয়মিত তাতে নতুন পরিসংখ্যান যোগ করার পক্ষেই সওয়াল করছেন অনেক বিশেষজ্ঞ। কেন্দ্রীয় সরকারকে অবিলম্বে সকলের কর্মসংস্থান সুনিশ্চিত করার ব্যাপারে ইতিবাচক ভূমিকা পালন করা প্রয়োজন। সবার পেটে ভাত, সবার হাতে কাজ চাই - এটাই এখন আম আদমির স্লোগানের অভিমুখ।

লেখক: দীপক সাহা ( সহকারি শিক্ষক , প্রাবন্ধিক) 

disclaimer: This post is totally written by Dipak Saha and already published in 'Dinodarpan Patrika' ( এই পোস্টটির লেখক দীপক সাহা এবং এই পোস্টটি ইতিপূর্বেই দিনদর্পন পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে)