জ্যামিতি বাক্সের নানা উপকরণ সহযোগে বিভিন্ন জ্যামিতিক ধারণা
অধ্যায়: 17 (ষষ্ঠ শ্রেণী গণিত)
ষষ্ঠ শ্রেণি – অধ্যায় 17 : জ্যামিতি বাক্সের নানান উপকরণ সহযোগে বিভিন্ন জ্যামিতিক ধারণা
প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন: জ্যামিতি বক্স কি?
উত্তর: জ্যামিতি বক্স হলো একটি বাক্স, যাতে জ্যামিতির জন্য প্রয়োজনীয় বিভিন্ন মাপযন্ত্র একসাথে রাখা হয়।
প্রশ্ন: জ্যামিতি বক্সে কি কি উপকরণ থাকে?
উত্তর: সাধারণত স্কেল, কাটা কম্পাস বা ডিভাইডার, পেন্সিল কম্পাস, চাঁদা (প্রটেক্টর), সেট স্কোয়ার ইত্যাদি থাকে।
প্রশ্ন: জ্যামিতি বক্সের ইতিহাস সংক্ষেপে লেখো।
উত্তর: জ্যামিতি বক্সের যন্ত্রগুলোর উৎপত্তি প্রাচীন সভ্যতার মাপযন্ত্র থেকে, যা ইউক্লিড, আর্কিমিডিস ও ইসলামি গণিতবিদদের মাধ্যমে বিকশিত হয়ে উনবিংশ শতকে স্কুলে একটি বাক্সে সাজানো রূপ পায়। বিংশ শতকে ধাতব ও প্লাস্টিকের বক্স বিদ্যালয়ে মানসম্মত সরঞ্জাম হিসেবে জনপ্রিয় হয়।
প্রশ্ন: স্কেলের দুটি ব্যবহার লেখো।
- সরল রেখাংশের দৈর্ঘ্য মাপা যায়।
- দুটি বিন্দুকে যুক্ত করে সরলরেখাংশ আঁকা যায়।
- নির্দিষ্ট দৈর্ঘ্যের সরলরেখাংশ আঁকা যায়।
- সরল রেখাংশকে দুদিকে বর্ধিত করা যায়।
প্রশ্ন: স্কেল ও পেন্সিলের সাহায্যে 2.8 সেমি ও 5.3 সেমি দৈর্ঘ্যের দুটি সরলরেখাংশ আঁকো ও নাম দাও।
উত্তর: স্কেল দিয়ে নির্দিষ্ট দৈর্ঘ্য মেপে পেন্সিল দিয়ে আঁকতে হবে এবং নাম দিতে হবে।
প্রশ্ন: জ্যামিতি বক্সে কত রকমের কম্পাস থাকে?
উত্তর: দুটি— কাটা কম্পাস বা ডিভাইডার এবং পেন্সিল কম্পাস।
প্রশ্ন: কাটা কম্পাসের ব্যবহার লেখো।
উত্তর: কাটা কম্পাস দিয়ে দুটি বিন্দুর মধ্যবর্তী দূরত্ব মাপা হয় এবং স্কেলের সাথে মেলিয়ে সেই দৈর্ঘ্য নির্ধারণ করা যায়।
প্রশ্ন: স্কেলের সাহায্যে সরল রেখাংশের দৈর্ঘ্য মাপার সময় কি কি অসুবিধা দেখা দেয়?
- স্কেল পুরু হলে সঠিকভাবে মাপা যায় না।
- মাপার সময় চোখ স্কেলের সাথে লম্বভাবে না রাখলে ভুল হয়।
প্রশ্ন: লম্বন ভ্রম বা লম্বন ভুল কি?
উত্তর: সরল রেখাংশের মাপ নেওয়ার সময় চোখ স্কেলের উপর লম্বভাবে না রেখে কোনাকুনি রাখলে সঠিক মাপ পাওয়া যায় না, একে লম্বন ভ্রম বলে।
প্রশ্ন: স্কেল ছাড়া রেখাংশের দৈর্ঘ্য মাপার উপায় কী?
উত্তর: কাটা কম্পাস দিয়ে রেখাংশের দুই প্রান্তের সাথে মিলিয়ে স্কেলের দাগের সাথে মেলানো হয়, তাতে দৈর্ঘ্য জানা যায়।
প্রশ্ন: স্কেল ও কাটা কম্পাসের সাহায্যে 4.5 সেমি সরলরেখাংশ আঁকার পদ্ধতি লেখো।
উত্তর: স্কেল দিয়ে 4.5 সেমি মাপ নিয়ে কাটা কম্পাস খাতায় বসিয়ে দুটি বিন্দুর দাগ দিয়ে তা সরলরেখা দিয়ে যুক্ত করতে হবে এবং নাম দিতে হবে।
প্রশ্ন: একটি সরলরেখা থেকে 6 সেমি দৈর্ঘ্যের সরলরেখাংশ XY আলাদা কর।
উত্তর: প্রথমে সরলরেখা আঁকতে হবে, তারপর কাটা কম্পাস দিয়ে 6 সেমি মাপ নিয়ে রেখায় বসিয়ে X ও Y বিন্দু চিহ্নিত করতে হবে।
প্রশ্ন: কেলে ও কাটা কম্পাসের সাহায্যে 5 সেমি ও 7 সেমি দুটি সরলরেখাংশ যোগ করে আঁকো।
উত্তর: প্রথমে 5 সেমি রেখাংশ আঁকতে হবে, তারপর সেই রেখার এক প্রান্ত থেকে 7 সেমি যোগ করে সম্পূর্ণ দৈর্ঘ্যের রেখাংশ আঁকতে হবে।
নিজে করি 17.4
- স্কেল ও কাটা কম্পাসের সাহায্যে 6 সেমি ও 5.7 সেমি দৈর্ঘ্যের দুটি সরলরেখাংশ আঁকো ও নাম দাও।
- স্কেল ও কাটা কম্পাসের সাহায্যে 3.6 সেমি ও 2.2 সেমি দৈর্ঘ্যের দুটি সরলরেখাংশ AB ও CD আঁকো।
প্রশ্ন: জ্যামিতি বক্সের যে উপকরণটির একদিকে কাটা ও অন্যদিকে পেন্সিল লাগানো যায় তাকে কি বলে?
উত্তর: পেন্সিল কম্পাস।
প্রশ্ন: পেন্সিল কম্পাসের ব্যবহার লেখো।
- নির্দিষ্ট ব্যাসার্ধে বৃত্ত আঁকা যায়।
- সরলরেখাংশকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়।
প্রশ্ন: কোন যন্ত্রের সাহায্যে কোনের পরিমাপ মাপা হয়?
উত্তর: চাঁদা বা প্রটেক্টর।
প্রশ্ন: জ্যামিতি বক্সের অর্ধবৃত্তাকার যন্ত্রের নাম কি?
উত্তর: চাঁদা বা প্রটেক্টর।
প্রশ্ন: যে নির্দিষ্ট বিন্দুতে কোন আঁকতে হয় সেই জায়গায় চাঁদার কোন অংশ রাখতে হয়?
উত্তর: ভূমিকেন্দ্র।
প্রশ্ন: চাঁদার বাইরে ও ভিতরে কত থেকে কত পরিমাপ লেখা থাকে?
উত্তর: শূন্য ডিগ্রি থেকে একশো আশি ডিগ্রি।
প্রশ্ন: চাঁদার বাঁদিকের ও ডানদিকের শূন্য ডিগ্রি যোগ করে কি পাওয়া যায়?
উত্তর: ভূমিরেখা।
প্রশ্ন: ভূমি রেখার মাঝের বিন্দুকে কি বলে?
উত্তর: ভূমিকেন্দ্র।
প্রশ্ন: চাঁদার সাহায্যে 60 ডিগ্রি কোন আঁকো ও নাম লেখো।
উত্তর: ভূমিরেখায় ভূমিকেন্দ্র রেখে 60 ডিগ্রি চিহ্নে রেখা টেনে কোন আঁকতে হবে এবং নাম দিতে হবে।
প্রশ্ন: চাঁদার সাহায্যে 210 ডিগ্রি কোন আঁকো।
উত্তর: 360 ডিগ্রি থেকে 210 ডিগ্রি বিয়োগ করলে 150 ডিগ্রি হয়। প্রথমে 150 ডিগ্রি কোন আঁকতে হবে, তার বিপরীত পাশের প্রবৃদ্ধ কোন হবে 210 ডিগ্রি।
কোনের প্রকারভেদ ও উদাহরণ
কোনের নাম | পরিমাপের শর্ত | উদাহরণ |
---|---|---|
সূক্ষ্মকোণ | শূন্য ডিগ্রি এর চেয়ে বড় কিন্তু 90 ডিগ্রি এর চেয়ে ছোট | 60 ডিগ্রি |
সমকোণ | 90 ডিগ্রি সমান | 90 ডিগ্রি |
স্থূলকোণ | 90 ডিগ্রি এর চেয়ে বড় কিন্তু 180 ডিগ্রি এর চেয়ে ছোট | 120 ডিগ্রি |
সরলকোণ | 180 ডিগ্রি সমান | 180 ডিগ্রি |
প্রবৃদ্ধকোণ | 180 ডিগ্রি এর চেয়ে বড় কিন্তু 360 ডিগ্রি এর চেয়ে ছোট | 210 ডিগ্রি |
পূর্ণকোণ | 360 ডিগ্রি সমান | 360 ডিগ্রি |
প্রশ্ন: চাঁদার সাহায্যে 38, 42, 60, 75, 90, 110, 145, 180, 200, 270 ডিগ্রি কোন আঁকো ও নাম লেখো।
উত্তর: প্রতিটি ক্ষেত্রে ভূমিরেখায় ভূমিকেন্দ্র রেখে নির্দিষ্ট ডিগ্রি চিহ্নে রেখা টেনে কোন আঁকতে হবে এবং নাম দিতে হবে।
প্রশ্ন: জ্যামিতি বক্সে ত্রিভুজাকার যে যন্ত্র থাকে তাদের কি বলা হয়?
সেটস্কয়ার বলা হয়।
প্রশ্ন: জ্যামিতি বক্সে সাধারণত কয় ধরনের সেট স্কয়ার থাকে?
সাধারণত দুই ধরনের সেট স্কয়ার থাকে। যথা: 60-30 সেটস্কয়ার এবং 45-45 সেট স্কয়ার।
────────────────────────────
1. প্রশ্ন: জ্যামিতিতে সেট স্কোয়ারের কত রকমের হয়?
উত্তর: সাধারণত দুই রকমের সেট স্কোয়ার হয়।
2. প্রশ্ন: সেট স্কোয়ারগুলোকে কি নামে ডাকা হয়?
উত্তর: ৪৫° সেট স্কোয়ার এবং ৩০°-৬০° সেট স্কোয়ার নামে ডাকা হয়।
3. 30° 60° সেট স্কোয়ার কাকে বলে?
যে সেট স্কোয়ার এর সমকোণ ছাড়াও অপর দুটি কোণ 30° ও 60° তাকে 30° 60° সেট স্কোয়ার বলে।
4. 45° সেট স্কোয়ার কাকে বলে?
যে সেট স্কোয়ার এর সমকোণ ছাড়াও অপর দুটি কোণ প্রত্যেকটি 45° তাকে 45° সেট স্কোয়ার বলে।
5. প্রশ্ন: কি কি ধরনের সেট স্কোয়ার থাকে?
উত্তর:
- ৪৫° সেট স্কোয়ার
- ৩০°-৬০° সেট স্কোয়ার
4. প্রশ্ন: দুটি নির্দিষ্ট সেট স্কোয়ার যুক্ত করে কি পাওয়া যায়?
উত্তর:
- দুটি ৪৫° সেট স্কোয়ার যুক্ত করলে বর্গক্ষেত্র পাওয়া যায়।
- দুটি ৩০°-৬০° সেট স্কোয়ার যুক্ত করলে সমবাহু ত্রিভুজ পাওয়া যায়।