আজকে আমরা দশম শ্রেণীর ভৌত বিজ্ঞানের প্রথম অধ্যায় পরিবেশের ভাবনা এর অন্তর্গত ভূতাপ শক্তি সম্পর্কে আলোচনা করব। ভূতাপ শক্তি কি , ভূতাপ শক্তি কে কিভাবে ব্যবহার করা হয় এবং বিকল্প হিসেবে ভূতাপ শক্তির ব্যবহারের কারণ নিয়ে আলোচনা করব।
ভূতাপ শক্তি কি | এর উৎস ও ব্যবহার
▣ ভূতাপ শক্তি কাকে বলে?
উত্তর- ভূগর্ভের উত্তপ্ত শিলার তাপশক্তিকে কাজে লাগিয়ে যে বিদ্যুৎশক্তি উৎপাদন করা হয়, তাকে ভূতাপীয় শক্তি বলে। আগ্নেয়গিরি বা উয় প্রস্রবণের মুখ দিয়ে একটি বড়াে এবং একটি ছােটো ব্যাসের সমকেন্দ্রিক নলকে মাটির গভীরে প্রায় 3000 মিটার চালনা করা হয়। বড়াে নলের মুখ দিয়ে সাধারণ উয়তার জলকে ভূগর্ভে পাঠানাে হলে, ভূগর্ভের প্রচণ্ড উত্তাপে সেই জল উচ্চচাপে বাষ্পে পরিণত হয়ে ছােটো ব্যাসের নলের মাধ্যমে দ্রুত বেগে বাইরে বেরিয়ে আসে। এই বাষ্পের চাপকে কাজে লাগিয়ে টারবাইন ঘুরিয়ে বিদ্যুৎশক্তি উৎপাদন করা হয়।
▣ ভূতাপ শক্তিকে কীভাবে ব্যবহার করা যায় তা লেখাে।
উত্তর- পৃথিবীর অভ্যন্তরে অবস্থিত উত্তপ্ত শিলা থেকে প্রাপ্ত তাপশক্তিকে কাজে লাগিয়ে তড়িৎশক্তি উৎপন্ন হয়। পৃথিবীর কিছু অঞ্চলে মাটির নীচে থাকা উত্তপ্ত শিলার সংস্পর্শে থাকা জল উত্তপ্ত হয়ে স্টিমে পরিণত হয়। স্টিমের পরিমাণ বাড়তে থাকলে চাপ বৃদ্ধি পেতে থাকে। এরপর ভূপৃষ্ঠে একটি গর্ত করে উত্তপ্ত শিলা পর্যন্ত একটি নল ঢুকিয়ে দিলে নলের মধ্যে দিয়ে উচ্চচাপে স্টিম বেরিয়ে আসে। এই স্টিম একটি টারবাইন ঘুরিয়ে জেনারেটরের সাহায্যে তড়িৎশক্তি উৎপন্ন করে। অনেক সময় ভূপৃষ্ঠে দুটি গর্ত করে দুটি নল ঢােকানাে হয়। একটির মধ্যে দিয়ে পাম্পের সাহায্যে ঠান্ডা জল প্রবেশ করানাে হয়। ঠান্ডা জল উত্তপ্ত হয়ে স্টিমে পরিণত হয়ে দ্বিতীয় নলটির মধ্যে দিয়ে বেরিয়ে এসে তড়িৎশক্তি উৎপন্ন করে।
▣ ভূতাপ শক্তিকে বিকল্প শক্তির উৎস হিসেবে গণ্য করার কারণ কী?
উত্তর- পৃথিবীর অভ্যন্তরে অবস্থিত উত্তপ্ত শিলা থেকে প্রাপ্ত ভূতাপ শক্তিকে কাজে লাগিয়ে তড়িৎশক্তি উৎপন্ন করা যায়। এই শক্তি প্রকৃতির অফুরন্ত সম্পদ, নিঃশেষিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না। বিজ্ঞানীদের মতানুসারে, ভূগর্ভের 10 কিমি গভীরতায় ভূতাপ শক্তি থেকে প্রাপ্ত শক্তির পরিমাণ 12 হাজার কিলােওয়াট-ঘণ্টা। সব দেশে এই শক্তিকে কাজে লাগানাের মতাে সামর্থ্য ও কারিগরি দক্ষতা না থাকলেও বিশ্বের উন্নতশীল কয়েকটি দেশ যেমন- আমেরিকা, ফিলিপিন্স, রাশিয়া, জাপান, ইটালি প্রভৃতি জায়গায় এই শক্তি প্রচুর পরিমাণে আহরণ করে কাজে লাগানাে হচ্ছে। এ ছাড়াও এই শক্তি হল দূষণমুক্ত। কাজেই ভবিষ্যতে এই শক্তিকে অপ্রচলিত শক্তির উৎসরূপে ভাবা যেতেই পারে।
▣ উষ্ণ প্রস্রবণ বা আগ্নেয়গিরি হল --------- র প্রধান উৎস।
উত্তর- ভূতাপ শক্তি।
▣ ভূতাপ শক্তি উৎপাদনের অন্যতম উপায় হল-
(A) গলিত ম্যাগমা থেকে তাপ বিদ্যুৎ উৎপাদন করা।
(B) উষ্ণ প্রস্রবণ কে কাজে লাগানো।
(C) ভূগর্ভে গভীর সুড়ঙ্গের মধ্যে জেনারেটর চালানো।
(D) গলিত ম্যাগমা থেকে জলবিদ্যুৎ উৎপাদন করা।
উত্তর- (B) উষ্ণ প্রস্রবণ কে কাজে লাগানো।
▣ ভূতাপ শক্তির প্রধান উৎস কি?
উত্তর- আগ্নেয়গিরি ও উষ্ণ প্রস্রবণ।
▣ ভূতাপ শক্তির একটি ব্যবহার লেখ।
উত্তর- ভূতাপ শক্তিকে কাজে লাগিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়।