বস্তুর ভর ও ভারের পার্থক্য চিরচরিত একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন যা একাধিকবার বিভিন্ন শ্রেণীর পরীক্ষায় ছাত্র-ছাত্রীদের লিখতে হয়েছে।আজকের আলোচনা পর্বে আমরা বস্তুর ভর ও ওজনের মধ্যেকার দশটি পার্থক্য নিয়ে আমরা আলোচনা করব।
সংজ্ঞা: কোন বস্তুকে পৃথিবী যে বল দ্বারা তার কেন্দ্রের দিকে আকর্ষণ করে তাকে ঐ বস্তুর ওজন বা ভার বলে। বস্তুটির ভর m এবং কোন স্থানের অভিকর্ষজ ত্বরণ g হলে , ওই স্থানে বস্তুর ওজন W= mg ।
ভর ও ওজনের পার্থক্য
আইনস্টাইনের আপেক্ষিকতা তত্ত্ব অনুসারে কোন বস্তুর বেগ কত আলোর বেগ এর কাছাকাছি হয় ততই তার ভর বৃদ্ধি পায়।কোন বস্তুর ভর যদি 5 কিলোগ্রাম হয় তাহলে ভূপৃষ্ঠে থাকাকালীন তার ওজন হবে 5 × 9.8 নিউটন = 5 কিলোগ্রাম-ভার। অনেক সময় বস্তুর ওজন 5 কিলোগ্রাম ভার না লিখে সংক্ষেপে কিলোগ্রাম বলা হয়। কোন বস্তুর ওজন ও ভর উভয়কে এই একই এককে প্রকাশ করা সম্ভব। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এই রাশির দুটি সম্পূর্ণ আলাদা। এইজন্যই ভর ও ওজনের পার্থক্য গুলো ভালো ভাবে আলোচনা করার দরকার আছে।
বস্তুর ভর ও ভারের পার্থক্য: ( ভর ও ওজনের পার্থক্য )
বস্তুর ভর | বস্তুর ভার বা ওজন |
---|---|
1. কোন বস্তুর মধ্যে যে পরিমাণ জড় পদার্থ থাকে তাকে ভর বলা হয়। | 1. কোন বস্তুকে পৃথিবী যে বল দ্বারা তার কেন্দ্রের দিকে আকর্ষণ করে তাকে তার ওজন বলা হয়। |
2. ভর হলো বস্তুর পরিমাণ। | 2. ভার হল আসলে বলের ভিন্নরূপ। |
3. ভর একটি স্কেলার রাশি। | 3. ওজন একটি ভেক্টর রাশি অভিমুখ পৃথিবীর কেন্দ্রের দিকে। |
4. বস্তুর ভর কোন কিছুর উপর নির্ভর করে না। | ওজন হলো বস্তুর ভর ও অভিকর্ষজ ত্বরণের গুনফল সুতরাং বস্তুর ভরের উপর নির্ভরশীল। |
5. ভর মাপা হয় সাধারণ তুলা যন্ত্র দিয়ে। | 5. বস্তুর ভার বা ওজন মাপা হয় স্প্রিং তুলা যন্ত্র দিয়ে। |
6. CGS পদ্ধতি ও SI তে ভরের একক যথাক্রমে গ্রাম ও কিলোগ্রাম। | 6. CGS ও SI পদ্ধতিতে ওজনের একক যথাক্রমে ডাইন ও নিউটন। |
7. কোন বস্তুর অবস্থান যাই হোক না কেন তার ভর একই থাকে। | 7. স্থান ভেদে অভিকর্ষজ ত্বরণের ভিন্নতার জন্য বস্তুর ওজন ভিন্ন হয়। |
8. ভূ কেন্দ্রের সাপেক্ষে বস্তুর ভর প্রভাবিত হয় না বলে বস্তুর ভর কে স্বকীয় ধর্ম বলে। | 8. বস্তুর ওজন কোন স্বকীয় ধর্ম নয়। |
9. বস্তুর ভর ও ওজনের উপর নির্ভরশীল নয়। | 9. বস্তুর ওজন ভরের উপর নির্ভরশীল। |
10. ভরের একক একটি মৌলিক একক। | 10. ওজনের একক একটি লব্ধ একক। |
আইনস্টাইনের আপেক্ষিকতা তত্ত্ব অনুসারে কোন বস্তুর বেগ কত আলোর বেগ এর কাছাকাছি হয় ততই তার ভর বৃদ্ধি পায়। তবে সুবিধার জন্য ভরকে একটি ধ্রুবক রাশি বলে গণ্য করা হয়।