কলিফর্ম কাউন্ট কাকে বলে ? প্রাণের বিকাশে ও প্রাণ ধারণের জলের ভৌত ধর্মের গুরুত্ব । পানীয় জলের অত্যাবশ্যকীয় গুণ গুলি কিকি

নবম শ্রেণী ভৌত বিজ্ঞান - আলোচ্য বিষয় কলিফর্ম কাউন্ট কাকে বলে । প্রাণের বিকাশে ও প্রাণ ধারণের জলের ভৌত ধর্মের গুরুত্ব । পানীয় জলের অত্যাবশ্যকীয় গুণ

নবম শ্রেণির আজকের পর্বে আমরা আলোচনা করব পানীয় জল সংক্রান্ত কতগুলি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন নিয়ে। জল ছাড়া কোন জীব বাঁচতে পারে না। জীবনধারণের জন্য জলের গুরুত্ব অপরিসীম সেই জন্যেই জলের আরেক নাম জীবন।



    কলিফর্ম কাউন্ট কাকে বলে

    কলিফর্ম হলো এক প্রকারের ব্যাকটেরিয়ার যা মানুষের ক্ষুদ্রান্তের বসবাস করে। যদি কোন প্রাণীর ক্ষুদ্রান্তে এই ব্যাকটেরিয়া পাওয়া যায় তাহলে বুঝতে হবে যে ওই প্রাণী যে জল পান করে তাতে রোগ সৃষ্টিকারী জীবাণু মিশে রয়েছে। কেন্দ্রীয় পরিবেশ মন্ত্রক পানীয় জলে কলিফর্ম ব্যাকটেরিয়া সর্বোচ্চ সংখ্যা নির্ধারিত করে দিয়েছে। মন্ত্রকের নির্ধারিত মান অনুসারে প্রতি 100 মিলি লিটার জলের কলিফর্ম ব্যাকটেরিয়া সর্বোচ্চ 500 টি হলে সেই জল পানের যোগ্য । প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে অনেক জায়গাতেই এই মান 1 লক্ষেরও বেশি হয় এবং সেই জল পান করে অনেক আন্তরিক কলেরা, আমাশয় প্রভৃতি রোগে আক্রান্ত হয়।


    প্রাণের বিকাশে ও প্রাণ ধারণের জলের বিভিন্ন ভৌত ধর্মের গুরুত্ব

    জল জীব দেহের জন্য খুবই অত্যাবশ্যকীয় একটি পদার্থ। জলের যে সমস্ত ভৌত ধর্ম গুলির জন্য আজ জল ব্যবহারযোগ্য ও প্রাণের বিকাশে জল প্রধান উপাদান হয়ে দাঁড়িয়েছে তা নিম্নে আলোচনা করা হল:


    কলিফর্ম কাউন্ট কাকে বলে ? প্রাণের বিকাশে ও প্রাণ ধারণের জলের ভৌত ধর্মের গুরুত্ব । পানীয় জলের অত্যাবশ্যকীয় গুণ গুলি কিকি

    সাধারণ তাপমাত্রায় তরল

    জীবের দেহের প্রয়োজনীয় নানান বিক্রিয়া ঘটাতে ও জীবের বেঁচে থাকার জন্য জল তরল মাধ্যম রূপে কাজ করে।


    জল বর্ণহীন

     জলের কোন বর্ণ না থাকায় গভীর জলাশয় এর নিচে সূর্যের আলো পৌঁছাতে পারে ও আলোর কোন অংশে শোষিত হয় না। হলিউড জলাশয়ের গভীরে থাকা জলজ উদ্ভিদ সালোকসংশ্লেষ সম্পন্ন করতে পারে।


    জলের আপেক্ষিক তাপ সর্বোচ্চ

    জলের আপেক্ষিক তাপ সর্বোচ্চ হওয়ায় একই উষ্ণতা বৃদ্ধিতে অন্যান্য তরল এর উষ্ণতা বৃদ্ধি পেলেও জল তুলনামূলকভাবে কম উষ্ণ হয়। এর জন্য বড় দেহবিশিষ্ট প্রাণীদের দেহে তাপমাত্রা নির্দিষ্ট থাকে।


    প্রমাণ চাপে জলের স্ফুটনাঙ্ক  100°C

    জলের স্ফুটনাঙ্ক বেশি হওয়ায় জলের বাষ্পীভবনের জন্য প্রয়োজনীয় তাপ বেশি লাগে। ঘাম হওয়া বা বাষ্পমোচন এর মাধ্যমে জীব দেহ থেকে জল বেরিয়ে গেলে দেহ ঠান্ডা হয়। খুব অল্প পরিমান জল বাষ্পীভূত হলেও অনেক বেশি পরিমাণে তার দেহ থেকে বেরিয়ে যায়। ফলে দেহ শীতল হয়।


    জলের কৈশিক ক্রিয়া

     ভূপৃষ্ঠের নিচে জলের বিন্দু রূপে আবদ্ধ থাকা উদ্ভিদজগতের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।উদ্ভিদ মূলরোম এর সাহায্যে এই কৈশিক জল শোষণ করে সালোকসংশ্লেষ সম্পন্ন করে।


    জল একটি সার্বজনীন দ্রাবক

     জলের জৈব ও অজৈব এমনকি কঠিন তরল গ্যাসীয় সবরকম পদার্থই দ্রবীভূত হতে পারে। তাই সহজেই বিভিন্ন বস্তু জলে দ্রবীভূত হয় দেহের বিভিন্ন অংশে পৌঁছে যেতে পারে।



    পানীয় জলের অত্যাবশ্যকীয় গুণসমূহ


    পানীয় জল হবে সম্পূর্ণ জীবাণুমুক্ত

    বিভিন্ন অণুবীক্ষণিক জীবাণু দ্বারা আন্তরিক কলেরা আমাশয় প্রভৃতি রোগ জলের মাধ্যমে সংক্রমিত হয়। তাই পানীয় জল জীবনে মুক্ত হওয়ার দরকার।

    কলিফর্ম কাউন্ট পরীক্ষার মাধ্যমে জলের এইসব অণুবীক্ষণিক জীবাণুর অস্তিত্ব জানা যায়।


    পানীয় জলে দ্রাব্য নাইট্রেট বা অ্যামোনিয়া থাকবে না


    নাইট্রেট ও অ্যামোনিয়া আমাদের স্বাস্থ্যের পক্ষে অত্যন্ত ক্ষতিকারক তাই পানীয় জলে কখনোই এগুলি থাকা উচিত নয়।


    পানীয় জলে তামা ও সীসা ইত্যাদি ধাতুর লবণ থাকবে না

    তামা ও সীসা প্রভৃতি ধাতুর লবণ বিষাক্ত হয় তাই এগুলি পানীয় জলের মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করলে নানান রকম রোগ সৃষ্টি হয়।


    পানীয় জলের pH এর সঠিক থাকা দরকার

    পানীয় জলের pH পিএইচ এর মাত্রা সঠিক না থাকলে আমাদের দেহ তরলের এসিড ক্ষার ভারসাম্য নষ্ট হবে।সে ক্ষেত্রে দাঁতের ক্ষয় বা চুল ওঠা ইত্যাদি নানান রকমের সমস্যা তৈরি হতে পারে।


    পানীয় জলে দ্রবীভূত অক্সিজেন থাকা দরকার

    অক্সিজেন যুক্ত পানীয় জল স্বাস্থ্যকর। খাদ্যবস্তু জারণ এর জন্য ও বিপাকক্রিয়া স্বাভাবিক রাখার জন্য অক্সিজেন অত্যন্ত প্রয়োজন। জলে দ্রবীভূত অক্সিজেনের মাত্রা লিটার প্রতি ছয় মিলিগ্রাম বা তার বেশি হলে সেই জলপান এর উপযুক্ত।


    পানীয় জলে ক্লোরাইড এর মাত্রা সঠিক থাকা দরকার

    স্বল্পমাত্রার ফ্লুরাইডযুক্ত জল স্বাস্থ্যের কোন ক্ষতি করে না কিন্তু দন্ত ক্ষয় রোধ করে। কিন্তু অধিক মাত্রায় ফ্লুরাইডযুক্ত জল পান করলে ফ্লুরোসিস রোগের আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।


    পানীয় জলে আর্সেনিক মুক্ত হতে হবে

    প্রতি লিটার পানীয় জলে 0.05 মিলিগ্রামের বেশি আর্সেনিক উপস্থিত থাকলে সেই জল আর স্বাস্থ্যসম্মত নয়।

    Post a Comment

    Please Comment , Your Comment is Very Important to Us.