আজকে আমরা দশম শ্রেণীর জীবন বিজ্ঞান মডেল অ্যাক্টিভিটি টাস্ক এর পার্ট নম্বর 2 এর প্রশ্নোত্তর নিয়ে আলোচনা করব। এই পর্বে রয়েছে ইউক্যারিওটিক ক্রোমোজোমের চিত্র, প্রাণীদের গমন এর কারণ, কোষ বিভাজন DNA , RNA ও অ্যাড্রিনালিন হরমোন সম্পর্কিত কতকগুলি প্রশ্ন। আমাদের ওয়েবসাইটে আমরা পঞ্চম থেকে দশম শ্রেণী পর্যন্ত সমস্ত বিষয়ের সাজেশন, প্রশ্নোত্তর ও মকটেস্ট কুইজ নিয়ে আলোচনা করি। কোন প্রশ্ন অথবা পরামর্শ থাকলে আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ অথবা টেলিগ্রাম গ্রুপে যোগাযোগ করো। তাহলে চলো শুরু করা যাক আজকের পর্ব:
দশম শ্রেণীর জীবন বিজ্ঞান মডেল অ্যাক্টিভিটি টাস্ক পার্ট 2 এর উত্তর
নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর লেখ:
১. একটি ইউক্যারিওটিক ক্রোমোজোমের অঙ্গসংস্থানের চিত্র অঙ্কন করে নিম্নলিখিত অংশগুলি চিহ্নিত করো
(ক) ক্রোমাটিড (খ) সেন্ট্রোমিয়ার (গ) নিউক্লিওলার অর্গানাইজার (ঘ) টেলোমিয়ার
![]() |
চিত্র: আদর্শ বা ইউক্যারিয়টিক ক্রোমোজোম |
২. প্রাণীদের গমন এর কারণ গুলি কি কি? ফ্লেক্সর ও এক্সটেনসর পেশির কার্যপদ্ধতি পরস্পরের বিপরীতধর্মী উপযুক্ত উদাহরণের সাহায্যে ব্যাখ্যা করো।
উত্তর: বিভিন্ন কারণে প্রাণীদের গমন ঘটে। নিচে প্রাণীদের গমন এর কারণগুলি উল্লেখ করা হলো:
◾ খাদ্যের খোঁজ: প্রাণীরা খাদ্য খোঁজার জন্য স্থানান্তরে গমন করে।
◾ আত্মরক্ষা: প্রাকৃতিক শক্তি ও খাদক প্রাণীদের কাছ থেকে নিজেকে সুরক্ষিত রাখতে প্রাণীরা গমন করে।
◾ ছড়িয়ে পড়া: একটি প্রাণী অনেকগুলো শাবকের জন্ম দিলে শাবক গুলি বড় হয়ে খাদ্য ও আশ্রয়ের জন্য বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়তে চায় ফলে তারা গমন করে।
◾আশ্রয় বা বাসস্থান এর খোঁজ: প্রাণীরা তাদের পছন্দমত ও নতুন আশ্রয় খুঁজার জন্য স্থানান্তর গমন করে।
◾ প্রজনন: প্রজনন বা বংশবিস্তারের উদ্দেশ্যে প্রাণীদের গমন এর প্রয়োজন হয়। উপযুক্ত সঙ্গী বা সঙ্গিনী খোঁজা, পুরুষ ও স্ত্রী প্রাণীদের যৌনমিলনের জন্য পরস্পরের কাছে আসার জন্য গমনের প্রয়োজন হয়।
◾ নতুন এবং অনুকূল পরিবেশের সন্ধান: স্থায়ী বাসস্থান এর তুলনায় নতুন ও আরো বেশি অনুকূল পরিবেশ খোঁজার জন্য প্রাণীরা অনেক সময় গমন করে।
◾ ফ্লেক্সর ও এক্সটেনশন পেশির কার্যপদ্ধতি পরস্পরের বিপরীতধর্মী কেন ?
ফ্লেক্সর পেশী দুটি অস্থি কে ভাগ হতে বা কাছাকাছি আসতে সাহায্য করে কিন্তু এক্সটেনসর পেশী ঠিক তার উল্টো অর্থাৎ দুটি পেশীকে দূরে সরে যেতে সাহায্য করে।
যেমন মানুষের হাতের বাইসেপস নামক ফ্লেক্সর পেশী কনুই সন্ধিকে ভাজ হতে সাহায্য করে। এর ফলে হিউমেরাস ও রেডিয়াস পরস্পরের কাছাকাছি চলে আসে। অন্যদিকে মানুষের হাতে থাকা ট্রাইসেপস নামক এক্সটেনসর পেশী ভাঁজ হওয়া হাতকে সোজা করতে সাহায্য করে। এর ফলে রেডিয়াস , হিউমেরাস এর কাছ থেকে দূরে সরে। অর্থাৎ ফ্লেক্সর ও এক্সটেনশন পেশির কার্যপদ্ধতি পরস্পরের বিপরীতধর্মী।
৩. কোষচক্রের S দশাকে সংশ্লেষ দশা বলা হয় বাক্যটির যথার্থতা বিচার করো। DNA ও RNA এর পার্থক্য উল্লেখ করো।
উত্তরঃ কোষচক্রের S দশা G1 ও G2 এর মধ্যবর্তী দশা ।S দশায় DNA এর প্রতিলিপি গঠন ও হিস্টোন প্রোটিন সংশ্লেষিত হয়।
যেহেতু সফল কোষ বিভাজনের জন্য জিনোমের যথাযথ প্রতিলিপি গঠন গুরুত্বপূর্ণ তাই এই দশায় সেই প্রক্রিয়া শক্তভাবে নিয়ন্ত্রিত ও পরীক্ষিত হয়।S দশা চলাকালীন কোশটি ক্রমাগত জিনোমের অস্বাভাবিকতাও পরীক্ষা করে।ক্ষতিগ্রস্ত DNA এর সনাক্তকরণ ঘটলেই এই দশার তিনটি আলাদা আলাদা চেক পয়েন্টে কোষ বিভাজনের অগ্রগতি বন্ধ হয়ে যায়। তাই কোষচক্রের S দশা খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং S দশাকে সংশ্লেষ দশা বলা যুক্তিপূর্ণ ।

DNA | RNA |
---|---|
dna হল দ্বিতন্ত্রী অর্থাৎ দুটি পলিনিউক্লিওটাইড শৃংখল বিশিষ্ট। | rna হল একটি পলিনিউক্লিওটাইড শৃংখল বিশিষ্ট। |
dna তে ডিঅক্সিরাইবোজ শর্করা থাকে। | rna তে রাইবোজ শর্করা থাকে। |
dna তে ইউরাসিল বেস থাকে না। | rna তে থাইমিন বেস থাকেনা। |
dna প্রতিলিপি গঠন করতে পারে। | rna প্রতিলিপি গঠন করতে পারে না। |
dna বংশগতির বৈশিষ্ট্য বহন করে। | কতিপয় ভাইরাস ছাড়া rna অধিকাংশ জীবে বংশগতির বৈশিষ্ট্য বহন করেনা। |
dna কার্যকরভাবে চিরস্থায়ী। | rna কার্য কতভাবে ক্ষণস্থায়ী। |
dna প্রধানত নিউক্লিয়াসে পাওয়া যায়। এছাড়াও মাইটোকনড্রিয়া ও ক্লোরোপ্লাস্টে পাওয়া যায়। | rna পাওয়া যায় ক্রোমোজোম , নিউক্লিওলাস, সাইটোপ্লাজম ও রাইবোজোমে। |
dna সরাসরি প্রোটিন তৈরি করতে পারে না। | rna সরাসরি প্রোটিন তৈরি করতে পারে। |
৪. অ্যাড্রিনালিন হরমোন আপৎকালীন পরিস্থিতির মোকাবিলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে- ব্যাখ্যা করো। ট্রপিক ও ন্যাস্টিক চলনের পার্থক্য লেখ।
উত্তরঃ অ্যাড্রিনালিন হরমোন আপৎকালীন পরিস্থিতি কিংবা হুমকির মুখে মানব দেহকে দ্রুত ও শক্তিশালী হতে সাহায্য করে। মানুষ যখন বিপদের মুখোমুখি হয়, তখন তাদের সামনে দুটি বিকল্প থাকে: ভয়ে পালিয়ে যাওয়া অথবা শিকারি বিরুদ্ধে লড়াই করা । এই প্প্ররতিটি তিক্রিয়া জন্যই পেশী-শক্তি দরকার হয়। সংকটকালে আমাদের অ্যামিডগালা (মস্তিষ্কের গোড়ার কাছাকাছি কোষ গুচ্ছ) বিপদ অনুভব করে তখন এটি হাইপোথ্যালামাসের কাছে পৌঁছে দেয় এবং ক্ষরিত অ্যাড্রিনালিন আমাদের শারীরবৃত্তীয় পরিবর্তন গুলিকে ট্রিগার করে যে, আমাদের শরীরের আক্রমণ প্রতিরক্ষা কিংবা দৌড়ে পালানোর প্রয়োজন।এমনকি প্রতিক্রিয়ার পূর্বে আমাদের হৃদপিণ্ড ইতিমধ্যে অক্সিজেন সমৃদ্ধ রক্ত পেশিতে পৌঁছে দিতে থাকে।
বিশ্রাম কালে এই হরমোন ক্ষরিত হলেও , দুঃখ, ভয়, মানসিক চাপ প্রভৃতি সংকটকালীন অবস্থা এই হরমোনের ক্ষরণ বাড়ে এবং এইসব আপৎকালীন পরিস্থিতি মোকাবেলায় সাহায্য করে। তাই অ্যাড্রিনালিন কে আপাতকালীন বা সংকটকালীন হরমোন ও বলা হয়।
◾ উত্তরঃ ট্রপিক ও ন্যাস্টিক চলনের পার্থক্য
বিষয় | ট্রপিক চলন | ন্যাস্টিক চলন |
---|---|---|
উদ্দীপকের ভূমিকা | ট্রপিক চলন উদ্দীপকের উৎসের অভিমুখ এর উপর নির্ভর করে। | ন্যাস্টিক চলন উদ্দীপকের তীব্রতার উপর নির্ভর করে। |
চলন এর প্রকৃতি | ট্রপিক চলন স্থায়ী ও বৃদ্ধিজনিত। | ন্যাস্টিক চলন অস্থায়ী ও রসস্ফীতি জনিত। |
হরমোনের ভূমিকা | টপিক চলনঅক্সিন হরমোন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। | ন্যাস্টিক চলনে অক্সিন হরমোনের কোন ভূমিকা নেই। |
উদাহরণ | গাছের ডাল আলোর দিকে বেঁকে যাওয়া। | বেশি উষ্ণতায় টিউলিপ ফুল ফোটা। |