বাংলা (Bengali) | গণিত (Math) | ইংরেজি (English) | ইতিহাস (History) |
---|---|---|---|
ভূগোল | ভৌত বিজ্ঞান | জীবন বিজ্ঞান | মক টেস্ট (MCQ) |

রাদারফোর্ডের পরমাণুবাদ কি :
বিজ্ঞানী আর্নেস্ট রাদারফোর্ড ১৯০৯ সালে আলফা কণার বিক্ষেপণ পরীক্ষার ফলাফল থেকে ১৯১১ সালে সৌরমন্ডলের সাথে সাদৃশ্য রেখে পরমাণুর গঠন সম্পর্কে নিজস্ব মতবাদ উপস্থাপন করেন। এ মতবাদটিকে রাদারফোর্ডের সোলার সিস্টেম অ্যাটম মডেল (Rutherford's solar system atom model) বলা হয়।রাদারফোর্ডের পরমাণুবাদের স্বীকার্য অনুযায়ী:
- সকল পরমাণু অতিশয় ক্ষুদ্র গোলাকৃতি কণা। এর দুটি অংশ রয়েছে যথা:
- (a) নিউক্লিয়াস (পরমাণুর কেন্দ্রক) এবং
- (b) কেন্দ্রক বহির্ভূত অঞ্চল।
- পরমাণু কেন্দ্রক বা নিউক্লিয়াস পরমাণুর কেন্দ্রে যে ক্ষুদ্রতম অংশে পরমাণুর সমস্ত ধনাত্মক আধান ও ভর অবস্থান করে সেই অংশটিকে পরমাণুর নিউক্লিয়াস বা পরমাণুর কেন্দ্রক বলে।
- পরমাণুর বাকি অংশ জুড়ে রয়েছে ইলেকট্রন। ইলেক্ট্ন গুলো নিউক্লিয়াসকে কেন্দ্র করে ঘুরছে।
- পরমাণু তড়িৎনিরপেক্ষ। কারণ পরমাণুতে ধনাত্মক চার্জের সংখ্যা এবং পরিক্রমণশীল ঋণাত্মক চার্জযুক্ত ইলেকট্রনের সংখ্যা সমান।
- পরমাণুর নিউক্লিয়াসে ধনাত্মক আধান গ্রস্ত কণা প্রোটন থাকে।
![]() |
বিজ্ঞানী আর্নেস্ট রাদারফোর্ড |
নিউক্লিয়াসের ব্যাস (10^-13 সেমি) পরমাণুর ব্যাসের (10^-5 সেমি) প্রায় এক লক্ষ ভাগের এক ভাগ মাত্র। অর্থাৎ পরমাণু নিরেট নয়, এর অধিকাংশ স্থানই ফাঁকা।
সমগ্র পরমাণুর তুলনায় নিউক্লিয়াসের আয়তন অত্যন্ত কম।
পরমাণুর প্রায় সমস্ত ভর নিউক্লিয়াসের মধ্যে থাকে। কারণ ইলেকট্রনের ভর নগণ্য বলে পরমাণুর সমস্ত ভর ই নিউক্লিয়াসে কেন্দ্রীভূত থাকে।তাই মোটামুটিভাবে নিউক্লিয়াসের ভরই পারমাণবিক ভর। এ কারণে পরমাণুর । আয়তন খুব কম হওয়ায় নিউক্লিয়াসের ঘনত্ব খুব বেশি।
পরমাণুর সবচেয়ে সুঙ্খিত অংশ হল নিউক্লিয়াস।
নিউক্লিয়াসের বাইরে ইলেকট্রন মহল :
- পরমাণু তড়িৎ নিরপেক্ষ বলে প্রত্যেক পরমাণুর নিউক্লিয়াসে মোট যতগুলি প্রোটন থাকে ঠিক যতগুলি ইলেকট্রন নিউক্লিয়াসের বাইরের বাকি অংশে সজ্জিত থাকে।পরমাণুর এই অংশকে ইলেকট্রন মহল বলে।
- সৌরমন্ডলে সূর্যের চারদিকে আবর্তনীয় গ্রহসমুহের মত পরমাণুতে নিউক্লিয়াসের চতুর্দিকে কক্ষপথে কতগুলো ঋণাত্মক কণিকা সর্বদা ঘূর্ণায়মান থাকে। এদের ইলেকট্রন বলে।
নিউক্লিয়াস ও ইলেকট্রনের মধ্যে বিরাজিত কেন্দ্রমুখী স্থির বিদ্যুৎ আকর্ষণ বল ও ঘূর্ণনের ফলে সৃষ্ট কেন্দ্রবিমুখী বলের মান সমান ও বিপরীতমুখী।এই দুই বিপরীতমুখী বলের ক্রিয়ায় ইলেকট্রনগুলি নিউক্লিয়াসের চারদিকে আবর্তন করে চলেছে।
রাদারফোর্ডের পরমাণু মডেলের ত্রুটি (Limitation of Rutherford's atomic model)
রাদারফোর্ডের পরমাণু মডেলের প্রধান দুটি অসঙ্গতি দেখা যায়। যেমন—বিজ্ঞানী নীলস বোর (Niels Bohr) জানান যে, ধনাত্মক চার্জ বাহী নিউক্লিয়াসকে কেন্দ্র করে ঋণাত্মক কার্যবাহী ইলেকট্রনগুলি বৃত্তাকার পথে আবর্তন করতে থাকলে তড়িৎ গতিবিদ্যার নিয়ম অনুযায়ী এগুলো থেকে সর্বদা শক্তি বিকিরণ হতে থাকবে। ফলে ইলেকট্রনগুলি শক্তি হারাবে এবং ঘুরতে ঘুরতে ক্রমশ নিউক্লিয়াসের দিকে এগিয়ে যাবে। একসময় ইলেকট্রনগুলি নিউক্লিয়াসের ওপর গিয়ে পড়বে। অর্থাৎ, পরমাণুর আর কোনাে ইলেকট্রনীয় গঠন থাকবে না। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে তা হয় না যা রাদারফোর্ডের পরমাণু মডেলের একটি ত্রুটি।
![]() |
রাদারফোর্ডের পরমাণু মডেল |
নিউক্লিয়াসের চারদিকে ইলেকট্রন গুলো অবিরাম ঘুরতে থাকে ওই ঘূর্ণায়মান ইলেকট্রন গুলো থেকে অবিরাম শক্তি বিকীর্ণ হতে থাকে। এর ফলে পরমাণুর যে বর্ণালী পাওয়া যাবে, সেটা সূর্যরশ্মির বর্ণালীর মতে নিরবচ্ছিন্ন হবে। কিন্তু বাস্তবে দেখা যায় পরমাণু রেখা বর্ণালি সৃষ্টি করে। রাদারফোর্ডের পরমাণু মডেল এই ঘটনার ব্যাখ্যা করতে পারে না।যা রাদারফোর্ডের পরমাণু মডেলের অপর একটি ত্রুটি বা সীমাবদ্ধতা।